রাখিবন্ধন – পূরাণের প্রেক্ষাপট
নিউজ ডেস্ক::অনন্তকাল ধরেই হিন্দুদের মধ্যে রাখিবন্ধন উৎসব প্ৰচলিত। এটা অনেকটা হিন্দু বাঙালিদের ভাইফোঁটার মতো উৎসব। মূল উদ্দেশ্য হলো ভাইয়ের দীর্ঘ আয়ু ও সুস্থতা কামনা করে বোনরেরা। কিন্তু কবে থেকে প্ৰচলিত হয় এই উৎসব। এই বিষয়ে একাধিক অভিমত থাকলেও মহাভারতের একটি কাহিনী বেশ প্রাণিধানযোগ্য।
মহাভারতের কাহিনী অনুযায়ী, ১০০ টি অপরাধ করার পর যখন শ্রী কৃষ্ণ শিশুপালকে হত্যা করার জন্য যুদ্ধ করছিলেন, তখন শ্রী কৃষ্ণের তর্জনী কেটে রক্তপাত শুরু হয়েছিল। তারপর দ্রৌপদী তার শাড়ির আঁচলের একটা টুকরো ছিঁড়ে শ্রীকৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। তখন শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর পরে, শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীর ভরা সভায় বস্ত্র অপসারণের সময় তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে রাজা ধৃতরাষ্ট্রের দরবারে দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করেছিলেন। তখন থেকেই এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটাই সম্ভবত রাখি বন্ধন উৎসবের সূচনা। সাধারণত শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় এই উৎসব পালিত হয়।
এছাড়া ভারতীয় পুরানে রাখি বন্ধন উৎসবের একটি ক্ষীণ ধরা যুক্ত আছে। ভগবত পুরাণ এবং বিষ্ণু পুরাণের ভিত্তিতে, এটি বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান বিষ্ণু যখন রাজা বলিকে পরাজিত করে তিনটি জগতের অধিকার নিয়েছিলেন, তখন বলি আশীর্বাদ স্বরূপ ভগবান বিষ্ণুকে তাঁর প্রাসাদে থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ভগবান বিষ্ণু এই অনুরোধে রাজি হলেন। এর ফলে ভগবান নিজের বরেই আটকে গেলেন। এমতাবস্থায় মা লক্ষ্মী নারদ মুনির পরামর্শ নিলেন। এরপর মা লক্ষ্মী রক্ষা সুতো বেঁধে বলীকে ভাই বানিয়ে দেন। এতে বলি লক্ষ্মীরকে কাঙ্খিত উপহার চাইতে বলেন। মা লক্ষ্মী রাজা বলিকে রাখি বেঁধে ভগবান বিষ্ণুকে বৈকুণ্ঠে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপহার চেয়েছিলেন।
এ বছর ৩০ আগস্ট রাখি পূর্ণিমা। ভাই ও বোনদের মধুর সম্পর্কের দিন।