সৌরভ-ঝুলনরা সিএবির ইলিশ উৎসবে
নিউজ ডেস্ক::গঙ্গাপারে ক্রিকেটের নন্দনকাননে রবি-দুপুরে ইলিশ উৎসব। পিকনিকের মেজাজ বাংলা ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা। ‘মাছের রাজা’-র নানা পদের সম্ভারে তারকা আকর্ষণ অবশ্যই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এই উৎসবে আরও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। টিমগেমের বার্তা দিয়ে।
ইডেনে মাঠকর্মীদের ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনারের জন্য সিএবি প্রভূত অর্থ খরচ করলেও ভাইরাস অণু-পরমাণুর শোষণে শোচনীয় খাবার সরবরাহ করছিল দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। ওয়ানইন্ডিয়া বাংলা তা জনসমক্ষে আনতেই প্রাক্তন ক্রিকেটার স্নেহাশিস দ্রুত সেই সমস্যার সমাধান করেন। ইলিশ উৎসবে বঙ্গ ক্রিকেট কর্তাদের সঙ্গেই স্নেহাশিস ইডেনের সমস্ত স্তরের কর্মীদেরও সামিল করলেন। যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার।
ইডেনের সঙ্গে সমার্থক হয়ে যাওয়া বিজলী গ্রিল নয়, বরাত পেয়েছিল ৬ বালিগঞ্জ প্লেস। খাদ্যসূচিতেও খাঁটি বাঙালিয়ানা। ভাতের সঙ্গেই ইলিশের নানা পদ, মিষ্টি। ইলিশ ভাজা দিয়ে শুরু, ইলিশ মাছের মুড়ো দিয়ে পুঁই শাক, ইলিশ পাতুড়ি, আলু-বড়ি দিয়ে ইলিশের ঝোল। জানা গিয়েছে, আমন্ত্রিতদের কার্ড পাঠানো হয়েছিল। অপচয় এড়াতে ছিল কুপনের বন্দোবস্ত।
তবে ইলিশের গন্ধে হাজির ছিলেন জনা কয়েক সাংবাদিক। তাঁদের সর্বঘটে কাঁঠালি মানসিকতা দেখে হাসি-ঠাট্টা করেছেন সিএবির সঙ্গে জড়িতরা। সূত্রের খবর, কুপন তাঁদের কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলে। তবু প্রাক্তন ক্রিকেটারদের সঙ্গে ঘুরঘুর করে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। শেষে কপালে কিছু জুটেছে, নাকি গন্ধ শুঁকেই বিফল মনোরথে ফিরতে হয়েছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। যেটা জরুরি তা হলো, নেমন্তন্ন না পেয়েও তাঁরা হাজির হয়ে খেজুরে আলাপ চালিয়েছেন ইলিশের টানেই।
সৌরভ, স্নেহাশিসরা অতিথি আপ্যায়নে খামতি রাখেননি। স্ত্রী বুলবুলের পাশে বসে ইলিশের স্বাদ নিলেন অরুণ লাল। ঝুলন গোস্বামী ছিলেন, আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সদস্য অভিষেক ডালমিয়াও সস্ত্রীক এসেছিলেন। কেউ আবার উৎসবে যোগ দিলেও শারীরিক কারণে ইলিশ-ভাত খাননি।
সারা বছর যাঁরা ক্রিকেটের কাজে ব্যস্ত থাকেন, এই উৎসব ছিল তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গেট টুগেদার।তবে সকলেই যে সপরিবারে এসেছেন তা নয়। সৌরভের স্ত্রী ডোনা ও কন্যা সানা যেমন রয়েছেন ইংল্যান্ডে। কয়েক বছর ইডেনে ইলিশ উৎসব বন্ধ ছিল। আগে কর্তারা চাঁদা তুলে করতেন। এবার আয়োজন করল সিএবি। আহ্বায়ক ছিলেন সচিব নরেশ ওঝা ও যুগ্ম সচিব দেবব্রত দাস।
সিএবির বার্ষিক সাধারণ সভা আগামী মাসেই। ভোটাভুটি হবে না। ফলে নিন্দুকরা এই আয়োজনকে ভোটব্যাঙ্কের জন্য বলতে পারবেন না। কিন্তু কথায় আছে, স্বভাব যায় না মরলে!
উৎসব মেটার পর বিকেলে এক কর্তা দাঁতের ফাঁকে আটকে যাওয়া ইলিশের কাঁটা খোঁচাতে খোঁচাতে বললেন, এঁদের সঙ্গে কাজ করা যায় না (ইঙ্গিত শাসক গোষ্ঠীর একাংশের দিকে)। নোংরামি চলছে। যেখানে মাঠে ঠিকঠাক জল পৌঁছয় না সেখানে ৮ লাখ টাকা দিয়ে এমন উৎসবের কী যৌক্তিকতা? পিকনিক করলে চাঁদা তোলা তো যেত। ওই কর্তা যাঁদের টার্গেট করলেন তাঁদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বললেন, কে বলল ৮ লাখ টাকা খরচ? ফাইভ স্টার হোটেলে তাহলে এই উৎসব করা যেত। দিনের শেষে গঙ্গাপারে লঞ্চ ধরতে গিয়ে মাছ বিক্রেতার রূপালি শস্যের দিকে তাকিয়ে ভাবলাম, ইলিশেও কি তাহলে হলো না দুই প্রান্তের মিলমিশ!