সৌরভের গায়ে কালি লাগানোর অপচেষ্টা বৃথা

0 0
Read Time:7 Minute, 59 Second

নিউজ ডেস্কঃ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো বলার পরও মহারাজকে ‘ধান্দাবাজ’ বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বক্তব্যে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এমন অবস্থানগত বৈপরীত্য নিয়েই চলছে চর্চা।

শুভেন্দুর কটাক্ষকে আমল দেননি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। শুভেন্দুও এরপর সৌরভকে আক্রমণের পথে হাঁটেননি। কিন্তু যে ‘ধান্দাবাজি’ শব্দটিকে প্রত্যাহার করেননি। এই বক্তব্যটি বিজেপির অনেক সমর্থকও ভালোভাবে নেননি।

সৌরভের মতোই বিচলিত নন তাঁর টিমের সদস্যরা। সৌরভের ম্যানেজার তানিয়া ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্যে কারখানা হবে, কর্মসংস্থান হবে, বাংলার মেধাকে ভিনরাজ্যে বা ভিনদেশে যেতে হবে না। এটাকে তো স্বাগত জানানো উচিত। উৎসাহিত করা উচিত। সমালোচকরা লাইমলাইটে আসতে চাইছেন। আমরা গোটা বিষয়কে সদর্থকভাবেই দেখছি।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নীরবে মানুষের পাশে থেকে সমাজের জন্য যে কাজ করে থাকেন সৌরভের ফ্যানেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সে সব তুলে ধরছেন। সমালোচকদের মিথ্যাচারের পাল্টা হিসেবে, যাতে মিথ্যার আধিক্যে জনগণ বিভ্রান্ত না হন। যে সময় তরুণ প্রজন্ম কোভিড ভ্যাকসিন পাচ্ছিলেন না, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে উদ্যোগ নিয়ে ভ্যাকসিনের বন্দোবস্ত করেছিলেন।
একটি বেসরকারি হাসপাতালের মাধ্যমে শিবিরে আয়োজন করেছিলেন সৌরভ। সেখানে দু-তিনশো মানুষ ভ্যাকসিন নেন। জনা ৭০ দুঃস্থ মানুষের ভ্যাকসিনের ব্যয়ভার বহন করেছিলেন সৌরভ। কোভিডকালে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে ৫০টির বেশি সিলিন্ডার কিনে বিভিন্ন হাসপাতালে দিয়েছিলেন। বেলুড় মঠ, ইসকন-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চালও বিতরণ করেন মহারাজ।

নিজের অফিস থেকেও লকডাউনের মধ্যে সাধারণ মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণের বন্দোবস্ত করেছিলেন। আম্ফান-বিধ্বস্ত সুন্দরবনেও মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী, জামাকাপড় পাঠান সৌরভ। প্রচারের আলোয় এই সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছিলেন। ফলে তা অনেকে জানতে নাও পারেন। কিন্তু তাতে তাঁদের মিথ্যাচার করার ছাড়পত্র কেউ দেয়নি!
অনেকেই জানেন না, দুঃস্থ, মেধাবী মেয়েদের পড়াশোনার জন্য একটি সংস্থাকে ইতিমধ্যেই ২৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেছেন। এতে প্রাথমিকভাবে ২৫ জন দুঃস্থ, মেধাবী পড়ুয়ার প্রত্যেকে পড়াশোনার জন্য ১ লক্ষ টাকা করে পাবেন। বিসিসিআই থেকে নিজের প্রাপ্ত পেনশনের টাকা নিজে না নিয়ে দুঃস্থ ক্রিকেট প্রতিভাদের জন্য সৌরভ ব্যয় করেন। এই সত্যগুলিও তো লোককে জানতে হবে।

বাংলার মুকেশ কুমার ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। মুকেশ নিজে ওয়ানইন্ডিয়া বাংলাকে জানিয়েছিলেন, তাঁর কেরিয়ারে সৌরভের অবদানের কথা। সিএবি সভাপতি থাকাকালীন মহারাজ মুকেশকে ইডেনে থাকার বন্দোবস্ত করার পাশাপাশি একজন পেসারের পক্ষে উপযুক্ত খাবারের বন্দোবস্ত ব্যক্তিগতভাবে করেছিলেন সৌরভ।

সৌরভের আকাদেমি নিয়েও চলছে মিথ্যাচার। সৌরভের বন্ধু সঞ্জয় দাস সল্টলেকের আকাদেমির যাবতীয় বিষয় দেখেন। তিনি ওয়ানইন্ডিয়া বাংলাকে বললেন, প্রতি বছর শতাধিক ক্রিকেটার আকাদেমি থেকে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পাচ্ছেন। আইপিএলের বিভিন্ন দলে সুযোগ মিলছে। প্রচুর প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে বিনা পয়সায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় আকাদেমিতে।

উল্লেখ্য, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় মাদ্রিদ থেকে শালবনীতে ইস্পাত কারখানার ঘোষণা করার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানাবিধ কটাক্ষ করছেন অনেকে। ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নানা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য। এমনকী শুভেন্দুও জমি সংক্রান্ত যে সব দাবি করেছেন তা যে সর্বৈব মিথ্যা, প্রমাণ দিয়ে তা ওয়ানইন্ডিয়া বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন সৌরভ।
শুভেন্দুর দাবি ছিল, জমি নিয়ে সৌরভ আকাদেমি করেননি। কিন্তু বাস্তব হলো, বিধাননগরে এক-দুই নয়, ১৮ বছর ধরে আকাদেমি চলছে রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের জমিতে। শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, “অশোক ভট্টাচার্য ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ম্যানেজ করে” সৌরভ আকাদেমির জন্য জমি নিয়ে সেখানে স্কুল করতে গিয়েছিলেন। মামলা হয়।

বাস্তব হলো, আকাদেমির জন্য জমি নিয়ে সেখানে স্কুল করা যায় না, আইনে নেই। একাংশের বিরোধিতায় সৌরভের জমি নিয়ে মামলা হয়, কিন্তু আইনের দীর্ঘসূত্রিতায় না জড়িয়ে সৌরভ সেই জমি সরকারকে ফিরিয়ে দেন। নিউটাউনে সৌরভ স্কুলের জমি নিয়ে সরকারের থেকে জমি নিয়েছেন, শুভেন্দুর এই দাবিও সর্বৈব মিথ্যা।
টাটা ও সাপুরজি-পালোনজি গোষ্ঠীর থেকে জমি বাজারমূল্যে কিনেছেন মহারাজ। শালবনীর জমিটিও জিন্দালদের থেকে বাজারমূল্যে কেনা হয়েছে। সেখানে ১৬ মাসের মধ্যে ইস্পাত কারখানা হবে। ৬ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ৪-৫ মাসের মধ্যে কারখানার অনুমোদন মিলেছে এটা সৌরভ বলেছেন, ইজ অব ডুয়িং বিজনেস বা লগ্নি করতে মসৃণ পথের কথা তুলে ধরতেই।

লগ্নিকারীদের বাংলায় বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সঠিক কাজই করেছেন বলে অভিমত সিংহভাগ মানুষের। সৌরভ-ভক্তদের কথায়, কিছু লোকজন, যাঁদের বাংলার বাইরে তেমন পরিচিতি নেই তাঁরাই নিজেদের প্রচারের আলোয় আসতে বিরূপ মন্তব্য করছেন। দাদা যা বলেন তা করে দেখান। ইস্পাত কারখানা হলেই বাকিরা জবাব পেয়ে যাবেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!