সুদীপা ও অগ্নিদেবের বাড়ির পুজো
নিউজ ডেস্কঃ বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো শুধুমাত্র কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান না, বরং এক আবেগের নাম। পুজোর সময়ে শারদানন্দে মেতে ওঠেন আপামর বাঙালিরা। জাত-পাত ছোট বড় সমস্তু কিছু দূরে রেখে মেতে ওঠেন মা দুর্গার আরাধনায়। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সেলিব্রিটিরাও নিজেদের মতো করে উপভোগ করেন পুজোর আনন্দ। আর যাঁদের বাড়িতে পুজো হয়, তাঁদের তো কথাই নেই! ষষ্ঠী থেকে দশমী কাটে চোখের নিমিষে। ঠিক যেমন কাটে সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের। প্রতিবছর ধুমধাম করে পুজো হয় তাঁর বাড়িতে। বিশেষ কিছু নিয়ম আচারে অভিনবত্বের দাবি রাখে সুদীপা ও অগ্নিদেবের বাড়ির পুজোও।
অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়ের আদি বাড়ি ঢাকা বিক্রমপুরে। সেখানে পুজো প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো। তবে কলকাতার বাড়িতে এই নিয়ে ৯ বছর। তবে ওপার বাংলায় প্রচলিত রীতিনীতি মেনেই হয় এই পুজো। চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে মা সেজে ওঠেন বিবিধ অলংকারে। গলা থেকে পা অবধি লম্বা সীতাহারে দামী রত্নের বাহার। নাকে হীরের কমল নাকছাবি। জরোয়ার ময়ূর ব্রোচ। আরও কত কী। তবে সব গয়নাই মা পঞ্চমীতে পরেন না। চট্টোপাধ্যায় পরিবারের বিশ্বাস, সপ্তমীতে জামাই-মহাদেব আসেন শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। তিনি চলে গেলে বাড়ির মেয়েকে সব গয়না পরিয়ে দেওয়া হয়।
চট্টোপাধ্যায় পরিবারের মা কে ভোগ নিবেদন নিয়ে রয়েছে এক রোমহর্ষক কাহিনি। এই বাড়িতে প্রতিদিন অন্ন ভোগ নিবেদন করা হয়। তবে প্রত্যহ বিভিন্ন ভোগই পান মা। সপ্তমীতে গোবিন্দভোগ চালের খিচুড়ি, অষ্টমীতে রায়গঞ্জের তুলাইপাঞ্জি চাল দিয়ে ভোগ রাঁধা হয়। তারপর নবমীতে দেবীকে নিবেদন করা হয় শুধুমাত্র ঢাকার চিনিগুঁড়া চালের মাখা পোলাও ভোগ। এই চাল প্রতি বছর যেন কোনও না কোনওভাবে মা নিজেই ওপার বাংলা থেকে আনিয়ে নেন। কখনও এই চাল কিনতে হয় না। দশমীতে মায়ের ভোগ হয় সিদ্ধ চালের পান্তা। সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা, কচু শাক ও শাপলার টক। নবমীতে আমিষ ভোগে থাকে নিরামিষ মাংস। রান্না হয় কালীঘাটের গাওয়া ঘি দিয়ে। সেই দিনই বহুজন নিমন্ত্রিত থাকেন সুদীপার বাড়িতে। টলিউডের সব কাছের মানুষদের আমন্ত্রণ থাকে। দশমীতে ফুলের সাজে হয় মায়ের বিসর্জন।