মমতাবালা ঠাকুরকে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে তৃণমূল!
নিউজ ডেস্ক ::মতুয়া ভোট নিজেদের দিকে টানতে তৃণমূলকি মাস্টার্স স্ট্রোক দিল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি মমতাবালা ঠাকুরকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করে নতুন বার্তা দিলেন? যে মতুয়া ভোট তৃণমূল থেকে সরে গিয়েছিল, তাই কি আবার ফিরিয়ে আনার জোর চেষ্টা?
মমতাবালা ঠাকুরকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৃণমূলের প্রতিনিধি হয়ে তিনি রাজ্যসভায় যাবেন। এই কথা জলের মতো পরিষ্কার। তিনি প্রাক্তন সাংসদ। তবে এক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ তিনি মতুয়া ঠাকুরবাড়ির অন্যতম সদস্য।
বামেদের পর তৃণমূল কংগ্রেস মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কের উত্তরাধিকারী হয়। মতুয়া বড়মা বীণাপাণি দেবীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিবিড় সম্পর্ক ছিল। সে কারণেই মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক প্রায় সম্পূর্ণভাবে তৃণমূলের দিকে যায়। রাণাঘাট, বনগাঁর বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে তৃণমূলের কার্যত জয় জয়কার ছিল।
বীণাপাণি দেবীর ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর শুরু থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন ভোটে জিতে। বড় ছেলে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরও একসময় ভোটে জিতে সাংসদ হন। নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা সহ দক্ষিণবঙ্গের মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক তৃণমূলের দিকেই ব্যাপকভাবে ছিল। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় বীণাপাণি, কপিলকৃষ্ণ পরবর্তী সময়ে।
মতুয়া ঠাকুরবাড়িও বিজেপি- তৃণমূল রাজনীতিতে কার্যত বিভক্ত হয়। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে ভোটব্যাঙ্ক সম্পূর্ণরূপে ভেঙে যায় তৃণমূল কংগ্রেসের। মতুয়া ভোট কার্যত ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। শান্তনু ঠাকুর বিজেপির হয়ে ভোটে জিতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। তাছাড়াও এনআরসি, সিএএ ইস্যুতে বিজেপির দিকে মতুয়ারা ঝুঁকেছিল। নাগরিকত্ব তারা পাবেন। এই চর্চা মতুয়াদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলছে।
কিন্তু কোথাও গিয়ে মতুয়াদের আশাভঙ্গ হয়েছে। বিজেপিতে আস্থা রাখতে কিছুটা হলেয়াও ভাবতে হচ্ছে মতুয়া সম্প্রদায়কে। এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ব্যাপক ফল করে নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনার মতুয়া অধ্যুষিত অঞ্চলে। তবে তৃণমূলের দিকেও মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক ফিরেছে। তাদের ঝুলিতেও মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক দেখা গিয়েছে।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। রানাঘাট ও বনগাঁ এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস তাদের জমি ফিরে পেতে চাইছে। সে কারণেই মমতাবালা ঠাকুরকে রাজ্যসভায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। তুরুপের তাস ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷
তিনি নিশ্চিতভাবে মহিলাদের প্রতিনিধি। তাছাড়াও মতুয়াদের অন্যতম মুখ শান্তনু ঠাকুর। বিজেপি থেকে শেষপর্যন্ত ভোটে লড়ে দিল্লি পৌঁছাবেন কী না, তাই নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। তাই আগেভাগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আস্তিনের কার্ড ফেলে দিলেন। মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এখন প্রশ্ন একটাই। নাগরিকত্ব ইস্যুতে এবারও কি ভরসা রাখবে মতুয়া সম্প্রদায়? না কি পুরনো ভরসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তারা হাত বাড়িয়ে দেবে?