মহালয়া – ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ বাঙালির ৯০ বছরের আবেগ
নিউজ ডেস্ক::আশ্বিনের অমাবস্যা অর্থাৎ মহালয়ার দিন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ – এই প্রভাতী অনুষ্ঠানই বাঙালির কাছে যেন দুর্গাপূজার বার্তা বহন করে আনে।চন্ডীর স্তোত্র,কিছু ভক্তিমূলক গান ও কিছু পৌরাণিক কাহিনীর সংমিশ্রণে বাংলার প্রথম স্ক্রিপ্টস – যা এক নাগাড়ে ৯০ বছর ধরে নিয়মিত রেডিওতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
১৯৩২ সালে প্রথম সম্প্রচার হয়।প্রথমদিকে শিল্পীদের কন্ঠে সরাসরি সম্প্রচার হলেও ১৯৬৬ সাল থেকে অনুষ্ঠানের রেকর্ড সম্প্রচার হয়।শিল্পীদের সরাসরি অনুষ্ঠানমঞ্চে যেতে হয় না।
বাংলা ও সংস্কৃতভাষায় রচিত এই স্ক্রিপ্টটি ১ ঘন্টা ২৯ মিনিটের।মূল রচনা বাণী কুমারের হলেও,পঙ্কজ মল্লিক ও বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র এই স্ক্রিপ্ট রচনায় তাঁকে সম্পূর্ণ সাহায্য করে।সঙ্গীত পরিচালনায় পঙ্কজ মল্লিক,ভাষ্য ও চন্ডীপাঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র।১৯৩১ – ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত মূল স্ক্রিপ্ট বার বার পরিবর্তিত হয়েছে।১৯৩৭ সালে অনুষ্ঠানের নাম হয় ‘মহিষাসুর মর্দিনী’।এবং তখন থেকে মূল স্ক্রিপ্টস অপরিবর্তিত আছে।
১৯৭৬ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকার ওই স্ক্রিপ্ট পরিবর্তন করে নতুন করে ‘দুর্গতিহারিণীম’ নামে একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে – যার ভাষ্য পাঠে ছিলেন উত্তম কুমার।কিন্তু মুহূর্তে সমস্ত দেশ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়।প্রবল বাধার মুখে পড়ে ওই বছরই ষষ্ঠীর দিন ভোরে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সম্প্রচার করা হয়।তৎকালীন আকাশবাণীর জনপ্রিয় উপস্থাপক মিহির বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, – অনুষ্ঠান শেষে হতে না হতেই আকাশবাণী ভবনের সামনে জমায়েত বিশাল জনতা।- – – ফটকের গেট ভেঙে ঢুকে পড়তে চায় বিশাল জনতা।
ষষ্ঠীর দিন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সম্প্রচার করে আকাশবাণী সেই বিদ্রোহ সামাল দেয়।
দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়,সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়,আরতি মুখোপাধ্যায়,উৎপলা সেন,শ্যামল মিত্রের মতো তৎকালীন দিকপাল কণ্ঠশিল্পীদের কন্ঠে অনুপম হয়ে ওঠে এই ‘মহিষাসুরমর্দিনী’