শহরের বুকে অস্তিত্ব বিপন্নর আশঙ্কা মিনিবাসের
অপর্না দাস-: শহরের বুকে ছুটে বেড়ানো হলুদ-মেরুন রঙের মিনিবাস আমাদের সকলেরই পরিচিত। বেশ কয়েক বছর আগে ও আরামে কাছাকাছি গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে হলে অধিকাংশ মানুষ মিনিবাসেই চাপতেন। কিন্তু কালের হাওয়ায় তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। ২০২৭ সালে আচমকাই মিনিবাসের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। তার মূল কারণ, তাদের দাঁড়ানোর জায়গার অভাব। আর তারপর ওলা, উবের মতো হাল ফ্যাশনের গাড়ি তো আছেই।
সমীক্ষা বলছে, চলতি বছরে মিনিবাসের সংখ্যা দাড়িয়েছে সাতশোর কাছাকাছি। আর ২০২৪ এই মিনিবাসের দেখা মিলবে না বললেই চলে। জানা গিয়েছে, ১৯৭২ সালে তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শংকর রায় এই মিনিবাসের সূচনা করেন। সেই সময় একটি আইন প্রণয়ন করে বলা হয় যে, মিনিবাসে কেউ দাড়িয়ে যেতে পারবে না। কিন্তু ধীরে ধীরে এর চাহিদা এতটাই বেড়ে যায় যে, ১৯৮৫ সালে পুনরায় নতুন আইন পাস করা হয়। ফলে দাড়িয়ে যাতায়াত করার আইন পাস করা হয়। ফলে প্রথমে সাধারণ বাসের ভাড়া ১০ পয়সা আর মিনিবাসের বাসের ভাড়া ৫০ পয়সা হলেও, পরে তা পরিবর্তন করা হয়। তখন তাদের মধ্যে ফারাক কমে দাঁড়ায় এক টাকা। কিন্তু এসবের মধ্যেও যাত্রী নিয়ে দিনভর বেশ ছুটে চলছিল মিনি। ২০১৭ সালে হঠাত্ বিবাদিবাগের মিনিবাস হাব থেকে স্ট্যান্ড তুলে দেওয়া হয়। ফলে এরপর থেকে মিনিরা হয়ে যায় যাযাবর।
কলকাতা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট গ্যাজেট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বলা যায় যে, দুই ২৪ পরগণা, হাওড়া সহ কলকাতার মিনিবাসের রুটের সংখ্যা ১৪০টি। আর পারমিট করা বাসের সংখ্যা প্রায় ৩০০০। আর চলতি বছরে সেই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে সাতশোর কাছাকাছি। এর মধ্যে ২০২৪ সালে ৮৫ শতাংশ বাসের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে। ফলে আগামী প্রজন্ম হয় ত মিনিবাসকে বইয়ের পাতায় ছবি হিসেবে দেখবে। এমনই আশঙ্কা।
ছবি সৌজন্যে- ডেইলিহান্ট