স্বপ্নের স্যাহজাদা
অনামিকা নন্দী: স্বপ্ন দেখা ও তা বাস্তবে পূরণ করা সত্যি খুব কঠিন। আমরা যা স্বপ্ন দেখি তা যে সব সত্যি হবে তার কোনো মানে নেই যদি না সেই স্বপ্নের প্রতি আমরা নিজেরা উৎসাহী হয়।
আজ যার কথা আলোচনা করা হচ্ছে সে স্বপ্ন দেখতেও ভালোবাসতো এবং স্বপ্নপূরণের তাগিদও রাখত। স্বপ্ন দেখা তার প্যাশন বা নেশা বলা যেতে পারে। স্বপ্ন দেখেছিলেন চাঁদে যাওয়ার। রোজ তাই নিজের ঘরের বারান্দা থেকে উন্নত মানের টেলিস্কোপ দিয়ে দেখতেন চাঁদে নিজের কেনা জমি। সবসময়ই আলোচনা করতে ভালোবাসতেন স্ট্যাটিসটিকস, তারা, চাঁদ ও মহাকাশ নিয়ে। বই পড়তে ভালোবাসতেন আঁকতে ভালোবাসতেন এমনকি গানেও ছিলেন পারদর্শী। তিনি ছিলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। কিন্তু আজ নক্ষত্রের দেশেই সে এখন জ্বলজ্বল করছে । কথা বলছি অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের।
১৪ জুন দুপুর ১ টা নাগাদ সারাদেশ হঠাৎ করে মুখোমুখি হয় এক সত্যের। সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সমস্ত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এটাই ছড়িয়ে পড়ে যে সুশান্ত সিং রাজপুত আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু সত্যি কোনটা আত্মহত্যা না খুন! শুরু হয় তা নিয়ে জল্পনা। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ধেয়ে আসে তার অনুরাগীদের বিভিন্ন পোস্ট, বন্ধু-বান্ধবদের স্মৃতিবিজড়িত পোস্ট আর তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা।
পবিত্র রিস্তা থেকে দিল বেচারার যাত্রা খুব একটা সুখকর না হলেও মানুষটি থাকতেন হাসিখুশি। ছবি ব্লগবাস্টার হিট হোক বা ফ্লপ কোন কিছুই তাকে তেমন একটা প্রভাবিত করে নি। তিনি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসতেন এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্যও করেছেন প্রচুর প্রচেষ্টা। লিখেছেন অনেক ডাইরি। যাতে রয়েছে কিছু স্বপ্ন, কাউকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি, খারাপ লাগা, মন্দ লাগা, ভালোলাগা সবকিছু। সব মিলিয়ে মানুষটি বাহবার দাবি রাখে এতে কোন সন্দেহ নেই।
তার এই স্বপ্ন দেখার অদম্য সাহসকে হঠাৎ করে কেউ যেন থামিয়ে দিয়েছে আর সেই থামিয়ে দেওয়ার পেছনের কারণ জানার প্রচেষ্টায় রয়েছে আজ গোটা দেশ। ১৪ জুন এর ঘটনার পর থেকেই পুলিশ প্রশাসন থেকে করা হয়েছে বিভিন্ন তদন্ত কিন্তু তাতে খুশি হয়নি তার পরিবার সহ, বন্ধুবান্ধব ও তার অনুরাগীরা। গোটা দেশ চেয়েছে তদন্ত করবে সিবিআই। প্রায় ৬৬ দিনের অদম্য লড়াইয়ের পর সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় গোটা দেশের পক্ষে।
চলছে তদন্ত দায়ী করা হচ্ছে অনেককেই কিন্তু দোষী কে আর কেনই বা এমন অবিশ্বাস্যকর পরিণতি ঘটলো তার জীবনের তার কোন উত্তর খুঁজে পায়নি। কি হয়েছিল সেই দিন সেই সময় তা কারোর জানা নেই। বিহারের এই ছেলে স্বপ্ন দেখেছিল সুপারস্টার হওয়ার আর তার এই স্বপ্ন সত্যিও হয়েছে।
সে সত্যিই একজন সুপারস্টার।