আজকের মতো শুনানি শেষ
নিউজ ডেস্ক: নারদ মামলার শুনানি এই সপ্তাহের জন্য শেষ। নারদ মামলার শুনানিতে ‘স্লেজিং’! এমন ঘটনাই ঘটল কলকাতা হাইকোর্টের ভার্চুয়াল শুনানিতে। কলকাতা হাইকোর্টের বৃহস্পতিবার শুনানির চলাকালীন, তুষার মেহতার বক্তব্যর মাঝে মন্তব্য করতে থাকেন ৪ হেভিওয়েট নেতামন্ত্রীদের আইনজীবী কল্যণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই বিচারপতি সৌমেন সেন জানান, আম্পায়ার যতই চেষ্টা করুক না কেন ব্যাটসম্যানের কাছে থাকা ফিল্ডার মন্তব্য করবেই। এরপরই মজার ছলে তুষার মেহেতা জানান, হ্যাঁ, স্লেজিং চলতে থাকে।
আজ শুনানির শুরুতেই বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতাকে প্রশ্ন করেন, ২০১৭ সালে নারদকাণ্ডের তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে ৪ হেভিওয়েটকে গ্রেফতার করা হয়নি। গত ১৭ মে সকালে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাঁরা নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান। আপনারা হাইকোর্টে ইমেল করে অভিযোগ জানান। এরপর হাইকোর্ট জামিনে স্থগিতাদেশ দেয়। আপনারা যদি আদালতের সাধারণ নিয়ম মেনে পরের দিন বা তার পরের দিন মামলা করতেন, আর সেখানেও যদি নির্দেশ দিত আদালত, তাহলে আপনাদের অধিকার কীভাবে খর্ব হতো?
এরপর বিচারপতি আবারও প্রশ্ন করেন, আপনারা যে মেল পাঠিয়েছিলেন, সেখানে মামলার কোন্ চরিত্র মেনে অভিযোগ করেছেন, সেটা পরিষ্কার করে বলা ছিল না। বিচারপতি সৌমেন সেন প্রশ্ন করেন, যে ইমেল আপনারা পাঠিয়েছিলেন, তাকে আমরা মামলার কোন চরিত্র হিসেবে ধরব? জনস্বার্থ, জামিন খারিজ, না রিট?
এরপরই তুষার মেহেতা জানিয়েছেন, তুষার মেহতা বলেন, আমাদের চিঠিতে একাধিক অভিযোগ ছিল যার মধ্যে জনস্বার্থ অন্যতম। বিচারপতি হরিশ টন্ডন তুষার মেহতাকে প্রশ্ন করেন, আপনার কি মনে হয় না, বিচারব্যবস্থার যে ক্রম উচ্চ শ্রেণীবিন্যাস রয়েছে, সেটাও অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ?
উত্তর আসে, প্রধান বিচারপতি হলেন মাস্টার অফ রস্টার, তিনি যেকোনও মামলা যেকোনও বিচারপতির কাছে শুনানির জন্য পাঠাতে পারেন। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, এই বৃহত্তর বেঞ্চ যদি নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করতে পারে, তাহলে কি জামিনের আবেদনেও মঞ্জুর করতে পারে? উত্তর আসে, হাইকোর্ট মনে করলে যেমন মামলা স্থানান্তরের নির্দেশ দিতে পারে, তেমনই জামিনের আবেদনের স্থানান্তরের নির্দেশও দিতে পারে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, আমরা চাই এখন আগে জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু হোক। উত্তর আসে, আগে জামিনের শুনানি হলে মামলার বাকি অংশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে।
হেভিওয়েটদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, সমস্ত দিক থেকেই এটা একটা অভূতপূর্ব মামলা। চার হেভিওয়েটদের গ্রেফতারির দিন তৃণমূল সমর্থকের ভিড়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে, তিনি বলেন, সমস্ত বিষয় ছেড়ে সিবিআই শুধুমাত্র মানুষের ভিড় নিয়েই চিন্তিত। সিবিআই কখনও গোটা ঘটনার বিশদ বিবরণে যেতে চাইছে না। কারণ তাহলে তারা অসুবিধার মধ্যে পড়বে। তিনি আরও বলেন, কীভাবে বিচারক বাধাপ্রাপ্ত হলেন, কীভাবে বিচারব্যবস্থা বাধাপ্রাপ্ত হল, কীভাবে বিচারক পক্ষপাতদুষ্ট হলেন, কীভাবে মানুষের ভিড় এর জন্য দায়ী, তার কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সিবিআই-এর কাছে নেই। এরপরই এদিনের মতো, শুনানি শেষ হয়ে যায়।