দেশে বিজেপি বিরোধী মুখ মমতাই – ভবানীপুর জিতে দাবি তৃণমূলের
নিউজ ডেস্ক: রবিবাসরীয় দুপুরে ভবানীপুর আরও একবার প্রমাণ করল বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়৷ ৩ কেন্দ্রের উপনিবার্চনে বিপুল ভোটে জয়ের পর রাজ্যে তো বটেই, এই মুহুর্তে গোটা দেশে বিজেপি- বিরোধী মুখ হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধারেকাছে যে কেউ নেই তা একপ্রকার প্রমাণিত। একাধিক অভিযোগ, বিধানসভায় গেরুয়া শিবিরের উত্থান এই সবকিছুর মধ্যেও মানুষ দাঁড়িয়েছেন উন্নয়নের পাশেই এমনটাই মনে করছে তৃণমূল।
বিধানসভা নির্বাচনে ‘খেলা হবে’ স্লোগানেই বাজিমাত করেছিল ঘাসফুল শিবির। আর উপনির্বাচনে ভবানীপুরের খেলা শেষ হবে ভারত জয়ে—প্রচারে এসে এমন কথা বারবার বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভভবানীপুর থেকেই যে ভারত জয়ের সূচনা হবে এমন কথা উঠে এসেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যেও। গতকাল রেকর্ড ব্যবধানের জয়ের পরে তৃণমূল সুপ্রিমোর সেই দাবিকে রাজনৈতিক স্তরে নিয়ে গেল তৃণমূল। লোকসভা ভোটকে নজরে রেখে বিজেপি-বিরোধী শিবিরের একমাত্র মুখ হিসাবে মমতার নামই সামনে নিয়ে এলেন দলের নেতারা।
দলীয় নেতাদের মতে, যেভাবে গোটা রাজ্যকে উন্নয়নে ভরিয়ে দিয়েছেন মমতা এবং একই সঙ্গে তার যে ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মা এই দুইয়ের জন্যই ধরাশায়ী বিজেপি। আর তাই এই দুই অস্ত্রেই এবার গোটা ভারত জয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে তৃণমূল।
ভবানীপুর মমতার গড়। তার চেনা এলাকা তাই এই কেন্দ্র থেকে তিনি ভোটে দাঁড়ালে যে মানুষ তার পাশেই থাকবেন এমনটাই মত দলের নেতাদের। প্রচারে বেরিয়ে বারংবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেও সেই অর্থে জনমানসে তেমন সাড়া ফেলতে পারেননি বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। আর অন্যদিকে প্রায় জনশুন্য প্রচার চলত বাম প্রার্থী শ্রীজিব বিশ্বাসের। তাই ফলাফল বেরোনোর আগে সবাই একপ্রকার নিশ্চিত ছিল যে মমতা আগেই জিতে গেছেন। আর ফল বেরোনোর পর তাইই হল, হ্যাটট্রিক তো হলই উপরন্তু নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙলেন মমতা।
অন্যদিকে এই মুহুর্তে দেশে মোদী হাওয়া বেশ খানিকটা ফিকে। বেসরকারিকরণ, ধর্মীয় বিভেদ এরকম একাধিক ইস্যুতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জন্মেছে আর তার ওপর দলীয় কোন্দল তো আছেই তাই এই মুহুর্তে বিজেপির অবস্থা বেশ টলোমলো। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফল ঘোষণার পরে সর্বভারতীয় স্তরে দলের গ্রহণযোগ্যতার দিকে ইঙ্গিত করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘ভবানীপুরে ৪৬ শতাংশ অবাঙালি ভোটার। আমরা সব ভাষাভাষির ভোট পেয়েছি। এখানে গুজরাতি, মারওয়াড়ি, বিহারি, ওড়িয়া ভাষী লোক আছে।’ ভবানীপুরে যে ওয়ার্ডগুলি অবাঙালি অধ্যুষিত বলে চিহ্নিত, সেগুলিতেও তাঁর জয়ের কথা আলাদা করে উল্লেখ করেছেন মমতা। তাই সব মিলিয়ে ৩-০ ফলাফলের পরে এবার তৃণমূলের লক্ষ্য ভারত জয়। নয়া উদ্যমে তাই তৈরি হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার সৈনিকেরা।