মা কালীর রূপের আড়ালে লুকিয়ে অনেক রহস্য
নিউজ ডেস্ক: বরাবর ভক্তরা কালী মাকে দেখেছেন মৃন্ময়ী হিসেবেই। তাঁর যে মূর্তি আজ প্রচলিত তা কত প্রাচীন, এই প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই উঠে আসে। নৃতাত্ত্বিকরা বলেন, তন্ত্রোপাসনার পিছনে রয়েছে বিশ্বের প্রাচীনতম উপাসনা পদ্ধতি। তা প্রকৃতি উপাসনার আদিম পর্ব থেকে উঠে আসা। কালী সেই আদি শক্তিরই মূর্ত রূপ। কিন্তু আজকের এই কালী বা শ্যামা মূর্তি কিন্তু খুব প্রাচীন নয়।
কালিকার বর্তমান মূর্তির প্রতীকী ব্যঞ্জনা বিপুল। দেবীর গাত্রবর্ণ থেকে শুরু করে পদপ্রান্তের শৃগালটির পর্যন্ত প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে। কথিত আছে, ষোড়শ শতকের তন্ত্র সাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশই প্রথম কালীর রূপ কল্পনা করেছিলেন। তার আগে দেবী পূজিতা হতেন ‘যন্ত্রে’। ‘যন্ত্র’ বিভিন্ন শক্তির প্রতীকী রূপ। তা অনেকাংশেই জ্যামিতিক। তবে এ কথাও জানা যায় যে, কৃষ্ণানন্দের আগে গুহ্য মূর্তি শবশিবা বা অন্য কল্পে দেবী পূজিতা হতেন। সেই সব রূপ গৃহী ভক্তদের উপযোগী নয় ভেবে কৃষ্ণানন্দ সেই রূপে বদল আনেন।
দেবী কৃষ্ণবর্ণা। ‘ঋগ্বেদ’ জানায়, সৃষ্টির আগে ঘোর তমসা বা অন্ধকার সব কিছুকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। সেই সর্বব্যাপী তমসার প্রতীক বলেই তিনি কৃষ্ণবর্ণা। ‘মহানির্বাণতন্ত্র’ অনুসারে, শিব দেবীকে বলছেন— ‘সৃষ্টির পূর্বে বাক্য ও মনের অতীত তমোরূপে তুমি একাই ছিলে বিরজমানা।’ সেই একই গ্রন্থ অনুসারে অন্য যাবতীয় বর্ণ যেমন কৃষ্ণবর্ণে বিলীন হয়, তেমনই সৃষ্টির সব কিছুই কালীতে লীন হয়। মায়ের শ্যামা রূপ আবার মহাবিশ্বের নীলাভ বর্ণের প্রতীক। এমন ভাবেই মায়ের বিভিন্ন রুপের বিভিন্ন ইতিহাস ছড়িয়ে আছে আনাচেকানাচে