ডাক্তারি পড়তে হির ইউক্রেনে আটকে বঙ্গ সন্তানেরা
নিউজ ডেস্ক:ডাক্তারি পড়তে গিয়ে ইউক্রেনে আটকে বঙ্গ সন্তানেরা। রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধে তোলপাড় গোটা বিশ্ব। ইউক্রেনের যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ভারতের বহু নাগরিক। উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য ইউক্রেনে বঙ্গ সন্তানদের অনেকেই রয়েছে। যে সকল ছেলে মেয়েরা আটকে পড়েছে ভিনদেশে তাদের পরিবার উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হাবড়া থানার কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিপুর দক্ষিণ পাড়ার নিশা বিশ্বাস। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ডাক্তারি পড়তে ইউক্রেনে যায় সে। মধ্য ইউক্রেনের চিফ মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছে দক্ষিণ বাংলা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী নিশা বিশ্বাস। ওই দেশে যুদ্ধ শুরু হওয়ায় তার বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নিশার মা,বাবা,দিদি খুবই চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এবং নিশার পরিবারের তরফ থেকে কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে লিখিত আবেদন করা হয় তাদের মেয়েকে যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরিয়ে আনার জন্য।
একই ভাবে ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে আটকে পড়েছে আরামবাগ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বৃন্দারামপুর এলাকার বাসিন্দা আশিষ পড়ের একমাত্র ছেলে মায়ের নাম কৃষ্ণা পড়ে। চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন দেবার্ঘ্যের বাবা, মা ও ঠাকুমা। দেবার্ঘ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার পরেই ভালো রেজাল্ট হাওয়ায় সিদ্ধান্ত নেয় ডাক্তার পড়ার। সেইমতো ২০২১ সালে নভেম্বর মাসে সে ইউক্রেনের ডাক্তারি পড়তে যায়। বর্তমানে সে বাড়ি ফিরতে পারছে না উদ্বেগ তৈরি হয়েছে পরিবারের মধ্যে। বাবা-মা কোনরকমে হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন। ইতিমধ্যেই দেবার্ঘ্য জানিয়েছে সেখানে জলের অভাব দেখা দিয়েছে, আকাশে উড়ছে যুদ্ধ বিমান। শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের আওয়াজ আতঙ্কিত গোটা এলাকা। মোবাইলে চার্জ নেই ভালো করে কথা বলতে পারছে না। খাবার ও প্রায় শেষ হয়ে গেছে। বাড়ি ফেরার জন্য এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থাও হয়নি। আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে দেবার্ঘ্যের সাথে থাকা প্রায় কয়েক হাজার মেডিকেল স্টুডেন্ট। এদের মধ্যে বেশিরভাগই হলো ভারতীয়।
এদিকে নদীয়ার মাজদিয়ার ষষ্ঠীতলা পাড়া এলাকার বিশ্বাস পরিবার চিন্তা ও আর্তনাদে ভেঙে পড়েছে। বিশ্বাস পরিবারের সন্তান অরিন্দম বিশ্বাস ২০১৮ সালে ডাক্তারি পড়তে পারি দিয়েছিলেন সুদূর ইউক্রেনে। গত মাসে বাড়ি ফেরার কথা ছিল অরিন্দমের। বাড়ি ফেরার জন্য বিমানের টিকিট সংরক্ষণ হয়ে গেছিল। কিন্তু হঠাৎই রাশিয়াও ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণেই প্রতিটি বিমান পরিষেবা বন্ধ করে দেয় ইউক্রেন সরকার। আর তার কারণেই আর বাড়ি ফেরা হলো না মেডিকেল ছাত্র অরিন্দম বিশ্বাসের। বাড়ি না ফিরতে পাড়ায় বিশ্বাস পরিবারের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। সরকারের তরফ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে শীঘ্রই সেই সকল ছেলে মেয়েদের ফিরিয়ে আনার। বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ইউক্রেনে থাকা সবাই এখন দিন গুনছে তারা কখন বাড়ি ফিরবে এবং বাড়ির লোক তাদের অপেক্ষায়।