ডিয়ার সুমি, ফাস্ট নো মেনি মেনি শুভেচ্ছা ও ভালবাসা। দেন লকডাউন হোয়েন কাটালে’?
নিউজ ডেস্ক কেউ লিখেছে, ‘ডিয়ার সুমি, ফাস্ট নো মেনি মেনি শুভেচ্ছা ও ভালবাসা। দেন লকডাউন হোয়েন কাটালে’?আবার কারও লেখা, ‘আই হোপ ইউ? হোপ ইউ আর ফাইন? আই ওয়ান্ট টু শেয়ার উইথ ইউ অ্যাবাউট…’।
এক ঝলক পড়লে মনে হতে পারে হোয়াট্সঅ্যাপে কথা চালাচালি। আদতে এমনই সব বাক্য লেখা মাধ্যমিকে ইংরেজি পরীক্ষার খাতায়।
পড়ুয়ারা লিখেছে ইংরেজিতেই। কিন্তু বাক্যের গঠন, শব্দ বিন্যাস দেখে পরীক্ষক থ। এক পরীক্ষকের কথায়, ”পরীক্ষার্থীদের অনেকেই সাদা খাতা জমা দিয়েছে। কেউ কেউ হিজিবিজি লিখে খাতা ভরিয়েছে।” তবে সব থেকে নজরে পড়ছে বিচিত্র এই ভাষা— যাকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ‘হোয়াটসঅ্যাপ ল্যাঙ্গুয়েজ’ বলছেন। , ”হোয়াটসঅ্যাপে যেমন ইংরেজি-বাংলা মিশিয়ে জগাখিচুড়ি ভাষায় অনেকে লেখে, পরীক্ষার্থীদের একাংশ সেই ভাষাতেই উত্তর লিখেছে। যারকোনও অর্থহীন বাক্য।”
পরীক্ষার খাতায় হিজিবিজি লেখা, আঁকিবুকি কাটা নতুন নয়। উত্তরপত্রে ‘একটু পাশ করিয়ে দেবেন’ গোছের করুণ আর্তি কিন্তু এমন ভাষা পড়ে চিন্তিত তাঁরা। করোনার কারণে গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। নবমের মার্কশিট, দশমের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ হয়েছিল। করোনা কমায় এ বার মাধ্যমিক হয়েছে। ইতিমধ্যে খাতা দেখাও শুরু করে দিয়েছেন পরীক্ষকেরা। আর কিছু পরীক্ষার্থীর লেখা পড়ে শিউরে উঠছেন তাঁরা। এক পরীক্ষকের কথায়, ”কিছু খাতার যা অবস্থা, তাতে এরা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিল কি না, সেটাই বুঝতে পারছি না!”
শিক্ষক মহলের পর্যবেক্ষণ, করোনার কারণে একটা বড় অংশের ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার সঙ্গে দীর্ঘ সময় সম্পর্ক ছিল না। দীর্ঘ অনভ্যাসেই উত্তরপত্রে হিজিবিজি লেখা, আঁকিবুকির বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করছেন পরীক্ষকেরা, একাংশ স্কুল শিক্ষকও। আর অনলাইন পড়াশোনার দৌলতে ছাত্রছাত্রীদের হাতে হাতে এখন স্মার্ট ফোন। পড়াশোনাও অনেকটা হোয়াটসঅ্যাপ নির্ভর হয়ে পড়েছে। তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে উত্তরপত্রে। শালবনির মৌপাল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূন পড়িয়া বলছেন, ”দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খুবই ক্ষতি হয়েছে। অনেকে ভুলে গেছে পরীক্ষার খাতাটা মেসেজ লেখা বা চ্যাট করা নয়। সেখানে অন্তত ব্যকরণ মেনে শুদ্ধ ভাষাটা লিখতে হয়।” শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলছেন, ”করোনা পরিস্থিতি যখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়, তখনই আমরা স্কুলে অন্তত মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পঠনপাঠন চালুর দাবি জানিয়েছিলাম। তখন তা মানা হয়নি।”