কমনওয়েলথ গেমসে পদক তালিকার পাঁচে ভারত
নিউজ ডেস্ক::কমনওয়েলথ গেমসের অষ্টম দিনে ভারত কুস্তিতে তিনটি সোনা, একটি রুপো ও দুটি ব্রোঞ্জ জিতেছে।
ফলে সোনার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে নয়। আটটি রুপো ও ৯টি ব্রোঞ্জ-সহ ভারতের ঝুলিতে এখন মোট ২৬টি পদক। সাত থেকে এক লাফে ভারত পদক তালিকায় পাঁচে উঠে এসেছে। মহিলা হকিতে দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে ভারত সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাস্ত হয়েছে। শুক্রবার প্যারা টিটি-র পাশাপাশি লন বোলেও পদক নিশ্চিত হয়েছে ভারতের।
মহিলা হকির সেমিফাইনালে ভারতকে পেনাল্টি শুটআউটে হারিয়ে ফাইনালে চলে গেল অস্ট্রেলিয়া। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ে প্রথম কোয়ার্টারে রেবেকা গ্রেইনারের গোলে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। পরের দুটি কোয়ার্টার গোলশূন্য থাকে। চতুর্থ কোয়ার্টারে বন্দনা কাটারিয়ার গোলে সমতা ফেরায় ভারত। শেষ কয়েক মিনিট ভারতকে চাপে ফেলে দেয় অস্ট্রেলিয়া। তবে শেষ লগ্নে পরপর দুটি পেনাল্টি কর্নার পেয়ে কাজে লাগাতে পারেনি।
ভারতের ডিফেন্স এদিন মজবুত ছিল। গোলে প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন অধিনায়ক সবিতা। সারা ম্যাচে ১১টি পেনাল্টি কর্নার থেকে একটিও গোল পায়নি অস্ট্রেলিয়া। নির্ধারিত সময় ফল ছিল ১-১। ফলে পেনাল্টি শুটআউটে গড়ায় খেলা। প্রথম স্ট্রোকটি নিতে গিয়ে বল গোলে জড়াতে পারেননি অ্যামব্রোসিয়া মালোন। কিন্তু ঘড়ি চালু না হওয়ায় ফের তিনি সুযোগ পেয়ে যান। এবার গোলও করেন। আন্তর্জাতিক হকিতে ঘড়ি চালু না করার মতো বিষয় খুবই অপেশাদার এবং বিরল। এই দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েই ভারতের ছন্দ নষ্ট হয়ে যায়। ভারতের কেউই এরপর তিনটি প্রয়াস থেকে গোল করতে পারেননি। কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় ভারতীয় হকি খেলোয়াড়দের।
কমনওয়েলথ গেমসে লন বোলে শুক্রবার পদক নিশ্চিত করেছে ভারত। মহিলাদের ফোরসে এবারের গেমসে এসেছিল ঐতিহাসিক সোনা। বার পুরুষ ফোরস দল পৌঁছে গিয়েছে ফাইনালে। সুনীল বাহাদুর (লিড), নবনীত সিং (সেকন্ড), চন্দন কুমার সিং (থার্ড) এবং দীনেশ কুমার (স্কিপ)-কে নিয়ে গঠিত দলটি ঐতিহাসিক সোনা জয় থেকে আর এক কদম দূরে। সেমিফাইনালে ভারত লন বোলে পুরুষদের ফোরসে ইংল্যান্ডকে ১৩-১২ ব্যবধানে হারিয়ে পদক নিশ্চিত করেছে। এর আগে, লাভলি চৌবে, পিঙ্কি, নয়নমণি সাইকিয়া ও রূপা রানি তিরকে মহিলাদের লন বোলে সোনা এনে দিয়েছেন দেশকে। তবে লন বোলের অন্য ইভেন্টে লাভলি ও নয়নমণি মহিলাদের পেয়ারে কোয়ার্টার ফাইনালে পরাস্ত হয়েছেন।
ব্যাডমিন্টনে মহিলাদের সিঙ্গলসে পিভি সিন্ধু কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন উগান্ডার প্রতিপক্ষকে ২-০ ব্যবধানে চূর্ণ করে। সাইপ্রাসের প্রতিপক্ষকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছেন আকর্ষী কাশ্যপ। পুরুষদের সিঙ্গলসে প্রি কোয়ার্টারে জয় পেয়েছেন লক্ষ্য সেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছেন। কিদাম্বি শ্রীকান্ত কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষকে হারিয়ে। পুরুষদের ডাবলসে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে সাত্বিকসাইরাজ রাঙ্কিরেড্ডি ও চিরাগ শেট্টির জুটি। পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ আলি মুরাদ ও মহম্মদ ভাট্টি জুটি পরাস্ত হয়েছে ৮-২১, ৭-২১ গেমে।
টেবিল টেনিসে মহিলাদের সিঙ্গলসের সেমিফাইনালে উঠেছেন সৃজা আকুলা। তিনি ৪-৩ ব্যবধানে হারান কানাডার প্রতিপক্ষকে। তবে বিদায় নিয়েছেন মনিকা বাত্রা। কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি ০-৪ ব্যবধানে পরাস্ত হন সিঙ্গাপুরের জিয়ান জেংয়ের কাছে। অচন্ত শরথ কমল তিনটি বিভাগের সেমিফাইনালে উঠেছেন। পুরুষদের সিঙ্গলসে তিনি নাইজেরীয় ওলাজিডে ওমোতায়োকে ৪-২ ব্যবধানে উড়িয়ে দেন। এ ছাড়া পুরুষদের ডাবলস ও মিক্সড ডাবলসের সেমিফাইনালেও উঠেছেন শরথ কমল। মিক্সড ডাবলস কোয়ার্টারে তিনি সৃজা আকুলাকে নিয়ে হারিয়ে দেন দুবারের রুপোজয়ী ইংল্যান্ডের জুটিকে। পুরুষদের ডাবলসে তিনি জয় পেয়েছেন জি সাথিয়ানের সঙ্গে জুটি বেঁধে। পুরুষদের সিঙ্গলস কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন জি সাথিয়ান ও সানিল শেট্টি। মিক্সড ডাবলসে মনিকা-সাথিয়ান জুটি অবশ্য হেরে গিয়েছে। মহিলাদের ডাবলসের রাউন্ড অব সিক্সটিনের ম্যাচে শনিবার মনিকা বাত্রা নামবেন চিতালে দিয়া পরাগের সঙ্গে জুটি বেঁধে। আকুলা ও টেনিসনের জুটিও নামবে শেষ আটে যাওয়ার লক্ষ্যে।
হিমা দাস মহিলাদের ২০০ মিটারের ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলেন। অসমের ২২ বছরের এই অ্যাথলিট দ্বিতীয় সেমিফাইনালে তৃতীয় হন। তিনি সময় নেন ২৩.৪২ সেকেন্ড। হিমা যে সময় করে সেমিফাইনালে উঠেছিলেন, তার থেকে নিজের পারফরম্যান্স আর ভালো করতে পারেননি। নামিবিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার অ্যাথলিট যথাক্রমে ২২.৯৩ ও ২৩.৪১ সেকেন্ড সময় করে পৌঁছে যান ফাইনালে।