বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে ব্যাপমের পরে আরও এক বড় কেলেঙ্কারির!

0 0
Read Time:5 Minute, 21 Second

নিউজ ডেস্ক::এখনও ব্যাপম দুর্নীতি প্রসঙ্গে আসে সাধারণ মানুষের কথায়। সেই দুর্নীতি মন থেকে দূর না হতেই বিজেপির শিবরাজ সিং চৌহানের শাসনে আরও এক বড় কেলেঙ্গারি সামনে এসেছে। সেখানে রেশনে পুষ্টিকর খাবার বিতরণে বড় অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। খাবার সরবরাহ করেছে ট্রাক। কিন্তু তদন্তে দেখা গিয়েছে ট্রাকের নম্বর হিসেবে যা দেওয়া হয়েছে তা হল অটো কিংবা বাইক। এছাড়াও সুবিধাভোগী সনাক্তকরণেও অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রমাণ সামনে এসেছে।

মধ্যপ্রদেশের অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলের রিপোর্টেই এই দুর্নীতি সামনে এসেছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে। সুবিধাভোগীদের চিহ্নিতকরণে অনিয়ম ছাড়াও খাবার তৈরি, বিতরণ এবং তার মান নিয়েও জালিয়াতি ও অনিয়ম ধরা পড়েছে। এই রিপোর্ট আরও উল্লেখযোগ্য এই কারণে যে, রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে সুবিধাভোদীদের ২৪ শতাংশের ওপরে নির্ভর করে, যারা টেক হোম রেশনে অংশ নিয়েছিল। এই প্রকল্পের ইধীনে রাজ্যের ৪৯.৫৮ লক্ষ শিশু ও মহিলা নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। এর মধ্যে ৩৪.৬৯ লক্ষ শিশু এবং ১৪.২৫ লক্ষ গর্ভবতী মহিলা, ০.৬৪ লক্ষ স্কুলের বাইরে থাকা কিশোরীও রয়েছে।
রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে মাত্র ১২ লক্ষ ব্যক্তির ওপর অডিটের মাধ্যমে।

সরকারের কাছে রিপোর্টে পেশ করে বলা হয়েছিল, ৬.৯৪ কোটি টাকা মূল্যের ১,১২৫.৬৪ মেট্রিক টন রেশন নিয়ে গিয়েছে ট্রাক। যদিও পরে পরিবহণ বিভাগে পরীক্ষার পরে দেখা গিয়েছে, ট্রাকের নম্বর হিসেবে যেসব গাড়ির নম্বর দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে মোটর বাইক, গাড়ি, অটো কিংবা ট্যাঙ্কার।

যতজনকে সুবিধা দেওয়ার কথা তা তো হয়নি, তবে যতজনের কাছে সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, ফলাফলে তা প্রায় ৪০০ গুণ করে দেখানো হয়েছে। ২০১৮ সালের এপ্রিলের মধ্যে রেশন পাওয়ার যোগ্য ছাত্রছাত্রীদের সনাক্তকরণের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলির ওপরে থাকলেও ২০২১-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই কাজ শেষ হয়নি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ২০১৮-১৯ সালে স্কুল শিক্ষা দফতর যেখানে স্কুলের বাইরের ৯০০০ কিশোরীকে সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল, সেখানে নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের তরফে সেই সংখ্যাটা দেখানো হয় ৩৬.০৮ লক্ষ।


অডিটে দেখা গিয়েছে, ৮ টি জেলার ৪৯ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ৩ জন স্কুলের বাইরের কিশোরী এই প্রকল্পে তালিকুভুক্ত হয়েছিল। যদিও নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের তরফে সেই ৪৯ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ৬৩,৭৪৮ জনকে তালিকাভক্তির কথা জানিয়েছিল। এৎ মধ্যে ২০১৮-২১ সালের মধ্যে ২৯,১০৪ জন সুবিধা পেয়েছে বলেও জানানো হয়েছিল।

সরকারের কাছে পেশ করা রিপোর্টে দেখা গিয়েছে রেশন উৎপাদনকারী প্ল্যান্টগুলি তাদের ক্ষমতার বেশি উৎপাদন করেছে। কিন্তু সেই রেশন উৎপাদন করতে যে কাঁচামাল প্রয়োজন কিংবা বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, তার হিসেব নিয়ে দেখা গিয়েছে, সেখানে প্রায় ৫৮ কোটির তছরুপ করা হয়েছে।


মধ্যপ্রদেশের রেওয়া, বাদি, ধর, মণ্ডলা, সাহর ও শিবপুরীর ছটি প্ল্যান্ট থেকে ৮২১ মেট্রিকটন রেশন সরবরাহ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৪.৯৫ কোটি টাকা। তবে এইসব প্ল্যান্টগুলি এত রেশন উৎপাদনের জায়গাতেই নেই।
এছাড়াো ৯৭০০০ মেট্রিক টন রেশনের মধ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে ৮৬০০০ মেট্রিক টন রেশন বন্টনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাকি প্রায় ১০০০০ মেট্রিক টন রেশন গুদামে পাওয়া যায়নি। তাহলে কি চুরি করা হয়েছে, সেই প্রশ্নও উঠেছে। এর মূল্য প্রায় ৬২.৭২ কোটি টাকা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!