সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগের অধিকার!
নিউজ ডেস্ক::সরকারি কিংবা রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে চাকরিরত বাবা কিংবা মায়ের মৃত্যুর পরে সন্তানরা চাকরির দাবি করে থাকেন। সব ক্ষেত্রে না হলেও অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি পর্যায়ে সহানুভূতির ভিত্তিতে আবেদন মঞ্জুর করা হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তা করা না হলে আদালতে মামলাও হয়। সেরকমই একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সহানুভূতির ভিত্তিতে নিয়োগকে অধিকার হিসেবে দাবি করা যাবে না।
কেরল ভিত্তিক ফার্টিলাইজারস অ্যান্ড কেমিক্যালস ট্র্যাভাঙ্কোর লিমিটেডের কর্মীর মৃত্যু হয় ১৯৯৫ সালে। ১৪ বছর পরে তাঁর মেয়ে নিয়োগের জন্য আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরে আদালতে মামলা করেন। মৃত্যুর পর ২৭ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গিয়েছে। এই বছরের ৩১ মার্চ কেরল হাইকোর্টের তরফে ওই মহিলার পক্ষে রায় দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে ওই সংস্থা। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ফার্টিলাইজারস অ্যান্ড কেমিক্যালস ট্র্যাভাঙ্কোর লিমিটেডের পক্ষেই রায় দেয়।
বিচারপতি এমআর শাহ এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে হাইকোর্টের রায়কে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সেই রায়ে বলা হয়েছে সহামুভূতির ভিত্তিতে নিয়োগ একটি ছাড় মাত্র, তা কোনও অধিকার নয়।
সাধারণভাবে সরকারি ক্ষেত্রে সহানুভূতির ভিত্তিতে নিয়োগ সাধারণ নিয়োগের ব্যতিক্রম। সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়েছে, এই ব্যতিক্রম রয়েছে, কেননা যে ব্যক্তি মারা গিয়েছেন, তাঁর ওপরে নির্ভরশীল কেউ যাতে অনাহারে কিংবা জীবিকা নির্বাহের কোনও উপায় ছাড়াই অসুবিধায় না পড়েন। হঠাৎ করে পড়া সংকট যাতে সেই পরিবার কাটিয়ে উঠতে পারে, সেই কারণেই এই সুযোগ দেওয়া হয়।
২০২১-এর ২২ জানুয়ারি কেরল হাইকোর্টের এক বিচারপতির বেঞ্চ আবেদনকারীর আবেদন বিবেচনা করার নির্দেশ দেয় ওই সংস্থাকে।
সুপ্রিম কোর্টে ফার্টিলাইজারস অ্যান্ড কেমিক্যালস ট্র্যাভাঙ্কোর লিমিটেডের তরফে করা আবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯৫ সালে যে সময়ে ওই মেয়েটির বাবা মারা গিয়েছিলেন, সেই সময় মেয়েটির মা কেরলের স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ছিলেন। সেই কারণে সহানুভূতির নিয়োগের প্রয়োজন ছিল না। সেই সময় ওই আবেদনকারী ছিল নাবালিকা।
তবে ১৪ বছর পরে যে সময়ে সে সহানুভূতির চাকরির জন্য আবেদন করে, সেই সময় সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়েছে। পাশাপাশি ২০১৩ সালে আবেদনকারীর বিয়েও হয়ে যায়। ২০১৮-র ১২ ফেব্রুয়ারি ওই সংস্থার তরফে সহানুভূতির চাকরির আবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলা হয় মেয়ের নাম মৃত ব্যক্তির নির্ভরশীলদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এছাড়াও শুনানিতে আরও বলা হয়, সহানুভূতির নিয়োগের ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী কিংবা পুত্র কিংবা অবিবাহিত কন্যাকে সুযোগ দেওয়া হয়।