ঝালদা পুরসভায় আজ ভাগ্য নির্ধারণ তৃণমূলের
নিউজ ডেস্ক: পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার সমস্যা মিটছেই না।নির্বাচনের পরেই খুন হয় এক কংগ্রেস প্রার্থী।সেই নিয়েই শুরু সমস্যা।নানা ডামাডোলের মধ্যে শেষ পর্যন্ত শুরু হয় ‘ঘোড়া কেনাবেচা’।পুরসভা গঠন করে তৃণমূল।কিন্তু নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়।৭ মাসের মধ্যেই আবার আস্থা ভোট আজ সোমবার।
রাজনৈতিক খবরে প্রকাশ,মাত্র সাত মাস প্রশাসন চালানোর পরে এরমধ্যেই দখলে থাকা ঝালদা পুরসভা হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা তৃণমূল কংগ্রেসের । কারণ, নির্দল থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কাউন্সিলর ক্যাম্প বদল করেছেন। এতেই বেকায়দায় পড়ে গিয়েছে শাসক শিবির। সোমবার আস্থা ভোটেই ঠিক হয়ে যাবে, কার হাতে থাকবে ঝালদা পুরসভা।
গত বছর ১০/১১ ধরেই আমাদের রাজ্যে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।তা হলো,নির্বাচিত প্রতিনিধি ভয়ে হোক,ভক্তিতে হোক বা অর্থের কারণে হোক দ্রুত দল বদল করে ফেলছে।তারই পরিণতিতে আজ সোমবার ঝালদা পুরসভার আস্থা ভোট।নির্দলের সমর্থনে কংগ্রেসের রণকৌশল। আর তাতেই ঝালদা পুরসভায় জোর ডামাডোলের মুখে তৃণমূলের বোর্ড। এক কথায় শাসক শিবিরকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন নির্দল কাউন্সিলর শীলা চট্টোপাধ্যায়। ঝালদা পুরসভার মোট আসন ১২। পুরভোটে তৃণমূল কংগ্রেস পায় ৫ আসন। কংগ্রেসের ঝুলিতেও ৫, বাকি ২ আসনে জেতে নির্দল প্রার্থী। বোর্ড গঠনের জন্য ম্যাজিক ফিগার ৭।
ঝালদায় আজ যাই হোক আসল কথা জামা বদলের মতো দল বদলের যে কালচার সম্প্রতি এসেছে তা বন্ধ না হলে সমূহ বিপদ।ঝালদায় এখন আবার ত্রিশঙ্কু ফলাফল।শেষ পর্যন্ত কার দিক ভারি তা দেখা যাবে কয়েক ঘন্টা পরে।ত্রিশঙ্কু ফলাফলে কে বোর্ড গঠন করবে? সেই সময় দুই নির্দল প্রার্থী শীলা চ্যাটার্জি এবং সোমনাথ কর্মকারকে নিয়ে জল্পনা ছড়ায়। সোমনাথ কর্মকার বিক্ষুব্ধ তৃণমূল। দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। ভোটের পর শীলা চ্যাটার্জি যোগ দেন তৃণমূলে। ৬ আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে বোর্ড দখল করে নেয় তৃণমূল।
এই মুহূর্তে একটু ব্যাকফুটে তৃণমূল।কারণ কংগ্রেস প্রার্থী তপন কান্দু খুনের বিষয়ে আঙ্গুল উঠেছে শাসক দলের দিকে।ফলে পুনর্নির্বাচনে অবলীলায় জিতে যায় তার ভাইপো মিঠুন কান্দু।
এরই মধ্যে অঘটন। সাত মাস আগে, যাঁর সমর্থন পেয়ে বোর্ড গঠন করেছিল তৃণমূল, সেই শীলা চট্টোপাধ্যায় অনুন্নয়নের অভিযোগে তৃণমূলের থেকে সমর্থন তুলে নেন। এরপরই অনাস্থা ঘোষণা করে হাত শিবির। গদি বাঁচাতে আদালতের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল কংগ্রেস। কয়েক সপ্তাহের লড়াইয়ের পর, হাইকোর্টের নির্দেশে আজ ঝালদা পুরসভায় তলবি সভার পর আস্থা ভোটের সম্ভাবনা। কংগ্রেসের দাবি, তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন ২ নির্দল প্রার্থী। ফলে বোর্ড দখলে আত্মবিশ্বাসী হাত শিবির।
বোর্ড দখল যেই করুক,ঘাড়ের সামনে নিঃশ্বাস গেলবে আরেক দল।ফলে পুরসভা চালানো খুবই সমস্যা হবে।এদিকে ঝালদা পুরসভার কংগ্রেস নেত্রী পূর্ণিমা কান্দু বলেন, ‘আমরা আশাবাদী। কারণ সংখ্যা গরিষ্ঠতা আমাদেরই বেশি। তাই জয় আমাদেরই হবে।’ এত কিছুর পরেও হাল ছাড়তে নারাজ শাসক শিবির। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি চিরঞ্জীব চন্দ্র বলেন, ‘পুরবোর্ড দখল আমরাই করব। কাউন্সিলর থেকে সাধারণ মানুষ এটা জানেন তৃণমূল ছাড়া আর কিছু সম্ভব নয়। নিজ স্বার্থ পূরণে কিছু মানুষ খেলছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই ভোট দুই দলের কাছে অনেকটা এসিড টেস্টের মতো।তবে প্রশাসন সচেতন।তাই সোমবার ওই অঞ্চলে ১৪৪ ধরা জারি করেছে।