আবাস যোজনা থেকে নাম কাটার জন্য হিড়িক পড়েছে বর্ধমানে
নিউজ ডেস্কঃ একেই বলে রাজনৈতিক সংস্কৃতি! বিস্মিত হতেহয় নাগরিক মহলকে। উপপ্রধানের চারতলা বাড়ি(সেটাও গত কয়েক বছরের মধ্যে) সামনে আসতেই আবাস যোজনা থেকে নাম কাটাতে বিডিওকে চিঠি উপপ্রধানের।নিজের বা পরিজনদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য সমীক্ষক দলকে তো বটেই বিডিওকেও চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলের নেতা ও তাঁদের পরিজনেরা। বিজেপির দাবি, কেন্দ্রের চাপে ও স্থানীয় মানুষজনের ক্ষোভে পড়ে তৃণমূল নেতাদের বোধোদয় হয়েছে। পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও এত দিন কেন ওই প্রকল্পে বাড়ি নেবেন না বলে আবেদন জমা পড়েনি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।এমন রাজনীতিক সংস্কৃতি দেখে স্থানীয় মানুষেরা বলছেন,এদের হাতে দেশ চালানোর ভার দেওয়া তো ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
কেন্দ্রীয় সরকারের অনুরোধে রাজ্যসরকার বাধ্য হয়ে আবাস যোজনার বাড়ির টাকা প্রাপকদের নিয়ে তদন্ত শুরু করতেই এই চিত্র ফুটে উঠছে।রায়না ১ ব্লকের নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান, সমসপুর গ্রামের শেখ মহম্মদ ইসমাইলের (শান্ত) বাবা শেখ আবুল মসুদ ও শ্বশুর গোলাম মর্তুজার নাম আবাস প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকায় রয়েছে। আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নিয়ে গঠিত দল সমীক্ষা করে উপভোক্তাদের যোগ্যতা যাচাই করেছেন। তার পরেও মঙ্গলবার বিকেলে বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে বাড়ি নিতে ইচ্ছুক নন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। চিঠিতে শেখ আব্দুল মাসুদের দাবি, ‘‘সমীক্ষক দল আমার বাড়ির অবস্থা দেখে আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়ার যোগ্য বলে জানিয়েছিল। কিন্তু আমার বাড়ি ভালই আছে। সেই জন্য আমি আর বাড়ি নিতে ইচ্ছুক নই।’’ উপপ্রধান বলেন, ‘‘আমি দেখলাম তালিকায় আমার বাবা ও শ্বশুরের নাম রয়েছে। তাঁরা জানালেন, বাড়ি পাওয়ার যোগ্য হলেও তাঁরা আবাস প্রকল্পের সুবিধা নিতে চান না। আমিও আর বিতর্কে যেতে চাইনি।’’এই ঘটনাও সমীক্ষক দল কোনো বিতর্কে যেতে চান না।কিন্তু এদের বাড়ির অবস্থা দেখে শুধু বিস্মিত হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়।রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী পার্বতী ধাড়া মালিকের ছেলে, আড়ুই গ্রামের তন্ময় মালিকের নামও আবাস প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে। পার্বতী বিডিও-র কাছে ছেলের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ছেলের পাকা বাড়ি রয়েছে। সেই কারণে ওই প্রকল্পে বাড়ি নিতে ইচ্ছুক নন তাঁরা। খণ্ডঘোষের গুঁইর গ্রামের সুচিত্রা দত্তের দীর্ঘ দিনের পাকা বাড়ি। সুচিত্রার দাবি তিনি জানতেন না যে তার নাম ওখানে আছে।ইত্যাদি অজস্র অজুহাত দিয়ে নাম কাটানোর অজুহাত খাড়া করছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।নাগরিক মহল বলছে,এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেশের সর্বনাশ করে ছাড়বে।