তৃণমূলে ‘রোস্টার’ চালু শীঘ্রই
নিউজ ডেস্ক::তৃণমূলে ‘রোস্টার’ চালু হচ্ছে শীঘ্রই। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরবেন তৃণমূল নেতারা। তৃণমূলের শীর্ষসারির নেতাদের প্রতিটি জেলার কর্মসূচিতে পাঠাতে নিয়মের বেড়াজালে বাঁধা হচ্ছে। এবার থেকে রোস্টার মেনে প্রতিটি জেলার প্রচারে যেতে হবে নেতাদের।
তৃণমূল সূত্রের খবর প্রাথমিকভাবে এই রোস্টার চালু করা হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। সবার আগে নজর দেওয়া হয়েছে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলাকে। নতুন বছরের শুরু থেকেই এই জেলার বিধানসভা কেন্দ্র ধরে প্রচারে নামতে চলেছে তৃণমূল। এই প্রচার চলবে জনসংযোগের আঙ্গিকে।
উত্তর ২৪ পরগনাকে মডেল করে প্রতিটি মানুষের দুয়ারে পৌঁছতে চাইছে তৃণমূল। যে সমস্ত লোকসভা ও বিধানসভায় পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল, সর্বাগ্রে সেখানে যাওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে যাবেন তৃণমূলের নেতারা। মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনবেন। এবং তা সমাধানের চেষ্টা করবেন।
লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্রের কোথায় কোথায় পিছিয়ে রয়েছে তা চিহ্নিত করে তৃণমূল পরিকল্পনা কষেছে। তাঁরা মানুষের কাছে পৌছনোর চেষ্টা করছে রোস্টার তৈরি করে। তৃণমূল সংসদ ও বিধায়কদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রোস্টার মেনে প্রতিটি এলাকায় যেতে। গোষ্ঠীকোন্দল ভুলে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে বলেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
প্রত্যেককে যে যার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তৃণমূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে, তাঁদের কর্মসূচি থেকে বাইরে রাখতে। আর প্রথম জেলা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনাকে। উত্তর ২৪ পরগনার সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে যে এলাকায় সেই মতুয়া-গড়ে পাখির চোখ তৃণমূলের।
বাম আমলে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় এগিয়ে থাকত বামেরাই। পরিবর্তনের কিঞ্চিত আগে থেকেই তৃণমূলের দিকে ঘুরতে শুরু করেছিল এই জেলা। আবার তৃণমূল যখন মধ্যগগনে বিরাজ করছে, তখন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একাংশ বিজেপির দিকে ঘুরে গিয়েছে। মতুয়ারা সেই ২০১৯ সাল থেকেই বিজেপির পাল্লাভারী করেছে।
এই অবস্থায় তৃণমূল মতুয়া গড়কে পুনরুদ্ধার করতে বদ্ধফরিকর হয়েছে। আর তার জন্য জনসংযোগগেই প্রধান হাতিয়ার করছে তাঁরা। এখনও জেলাজুড়ে তৃণমূলেরই প্রভাব রয়েছে, শুধু বনগাঁর বিস্তীর্ণ এলাকা চলে গিয়েছে বিজেপির দিকে। যেখানে মতুয়ারা রয়েছে, বিজেপির সিএএ-তাসে প্রভাবিত হয়ে তৃণমূল-সঙ্গ ছেড়েছেন তাঁরা।
তৃণমূলের এবার মূল লক্ষ উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ও বারাকপুর। আর পঞ্চায়েতের থেকেও তাঁরা যে ২০২৪-কে টার্গেট করেই এই দুটি লোকসভা কেন্দ্রকে টার্গেট করছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দুটি কেন্দ্রই ২০১৯-এ জিতেছিল বিজেপি। বনগাঁয় ফ্যাক্টর হয়েছিল মতুয়া ভোট, আর বারাকপুরের হিন্দিভাষীদের ভোট।
বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ আবার তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। আর বনগাঁয় মতুয়া ভোট ফিরতে শুরু করেছে বলে তৃণমূলের দাবি। একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ভালো ফল করলেও বনগাঁয় হারানো জমি ফিরে পায়নি। এবার আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট ও ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের মুখে এই মতুয়া-গড়ে কামব্যাক করতে চাইছে তৃণমূল।
তৃণমূল মনে করছে কিছু নেতার আচরমে মানুষ সরে গিয়েছেন তাদের দিক থেকে। তাই সবার আগে আচরণ ঠিক করতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে। তাঁদের কাছে যেতে হবে। সেজন্যই বুথ ধরে ধরে প্রতিটি মানুষের দুয়ারে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। প্রয়জোন ভুল স্বীকার করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানুষের কাছে পৌঁছে জানার চেষ্টা করতে হবে, কোথায় ভুল ছিল। সেই ভুল শুধরে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করতে বে নেতাদের। দলের তরফে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।