পুলওয়ামা হামলার কালো দিবসে বার্তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর
নিউজ ডেস্কঃ আজ প্রেম দিবস। আবার ভারতের এই দিনেই রয়েছে এক রক্তাক্ত স্মৃতি। সেক্ষেত্রে এই দিনটিকে কালো দিবস বললে ভুল হবে না। কারণ আজ থেকে চার বছর আগে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এই দিনেই সিআরপিএফ জওয়ানদের নিশানা করে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল জঙ্গিরা।
তাতে ৪০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। কাজেই এই প্রেম দিবস এক প্রকার কালো দিবসও সেই শহিদ জওয়ানদের পরিবারের কাছে।
আজ থেকে চার বছর আগে ভূস্বর্গে ঘটেছিল সেই মর্মান্তিক ঘটনা। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসার দিনেই রক্তাক্ত হয়েছিল পুলওয়ামা হামলা। আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় শহিদ হয়েছিলেন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। তাঁরা ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন।
পুলওয়ামা থেকে ছুটির ঘন্টা বাজতেই বাড়ির পথে রওনা হয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে দ্রুত গতিতে ছুটে এসেিছল একটি গাড়ি। বিধ্বংসী সেই ঘটনা কোনও দুর্ঘটনা ছিল না। পরিকল্পিত ভাবে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল জইশ-ই-মহম্মদ।
আগে থেকেই খবর ছিল জঙ্গিদের কাছে। সেই মত পরিকল্পনা করেছিল পাক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। আত্মঘাতী বিস্ফোরণের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল কাশ্মীরেরই এক বাসিন্দাকে। তার নাম ছিল আদিল আহমেদ।
তার ব্রেনওয়াশ করে জিহাদি তৈরি করেছিল জঙ্গিরা। পুলওয়ামার কাকপোরা জেলার বাসিন্দা আদিল। ঘটনার দিন বিস্ফোরক বোঝাই ট্রাক সেই চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বলে জানা যায়। পরে হামলার দায় স্বীকার করেছিল জইশ-ই-মহম্মদ।
এই ঘটনার পরের দিন কাশ্মীর জুড়ে কার্ফু জারি করা হয়। এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেদিন কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন যারা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, যাঁরা এই হামলা চালিয়েছে তাঁদের কঠিন মূল্য চোকাতে হবে।
তারপরেই কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে সেনা বাহিনীকে সব স্বাধীনতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মোদী। গোটা কাশ্মীর জুড়ে শুরু হয় তুমুল জঙ্গিদমন অভিযান। গোয়েন্দারা জানায় যে পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকেই বিস্ফোরক নিয়ে এসে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
তারপরেই ভারত সার্জিকাল স্ট্রাইক চালায়। পুলওয়ামা হামলার বদলা নিতে বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান। পুলওয়ামা হামলার ১২ দিন পরে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশে বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার তুখোর দুই যুদ্ধবিমান সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় জইশ জঙ্গিদের ডেরা।
মিরাজ ২০০০ বিমানে চালানো হয় সেই সার্জিকাল স্ট্রাইক। তারপরের দিন আবার পাকিস্তানের আকাশ সীমা লঙ্ঘন করে ঢুকে পড়ে ভারতীয় বায়ুসেনার দুই বিমান। সেই ঘটনায় ভারতীয় বায়ুসেনার এক পাইলট পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে পড়ে। উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে আটক করে পাকিস্তান। তার পরের দিন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান উইং কমান্ডারকে মুক্তির কথা ঘোষণা করে।