অভিষেক এখনও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক!
নিউজ ডেস্ক::সম্প্রতি জাতীয় দলের স্বীকৃতি হারিয়েছে তৃণমূল। তারপর প্রথম সভা করতে আসছেন তৃণমূলের অঘোষিত সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় স্বীকৃতি হারানোর পরও তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ‘সর্বভারতীয়’ তকমা।
বাঁকুড়ায় সভার তোরণদ্বারে লেখা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার দুপুর দু’টোয় বাঁকুড়ার ওন্দায় সভায় বক্তব্য রাখবেন তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’ সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তাঁর নামের পাশে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ থাকায় বিতর্ক।
তৃণমূল জাতীয় স্বীকৃতি হারানোর পর এই মুহূর্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামের পাশে শুধুই সাংসদ থাকতে চায়। কিন্তু তিনি কীভাবে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থেকে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেননা অভিষেকের সভামঞ্চ-সহ অন্যান্য তোরণ গুলিতে ‘সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস’ কথা লেখা রয়েছে এখনও।
এমনকী প্রধান বক্তা হিসেবে দলের ‘সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়’ উল্লেখ রয়েছে। তা নিয়ে তৈরে হয়েছে বিতর্ক। এই শব্দবন্ধ ব্যবহার কি ইচ্ছাকৃত ভুল নাকি ওই ভুল অনিচ্ছাকৃত, সেই প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
তৃণমূলের এই সর্বভারতীয় শব্দবন্ধ ব্যবহার নিয়ে গর্জে উঠেছে বিজেপি। অভিষেকের সভার আগেই সমালোচনার ইস্যু পেয়ে গিয়েছে তারা। বিজেপি নেতা তথা ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা তৃণমূলকে ‘ভারতীয় রাজনীতিতে ছাগলের তিন নম্বর সন্তান বলে দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, তৃণমূল এখন একটা আঞ্চলিক দল। সেই আঞ্চলিক দলের সাধারণ সম্পাদক আসছেন, তার জন্য পাঁচ হাজার পুলিশ, ছ’হাজার সিভিক ভলান্টিয়ারের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। নির্বাচন কমিশনের তরফে তৃণমূলের সর্বভারতীয় তকমা কেড়ে নেওয়ার পরও ওই শব্দবন্ধ ব্যবহার করে সভা করা হচ্ছে। তা অনুচিত বলে মনে করেন তিনি।
সম্প্রতি জাতীয় দলের স্বীকৃতি হারিয়ে এক গভীর সঙ্কটের মুখে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর তৃণমূলে শুরু হয়েছে পদ বিড়ম্বনা। এতদিন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ছিল। তাই পদও ছিল সর্বভারতীয় স্তরে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন জাতীয় দলের তকমা ছিনিয়ে নেওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল এখন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় স্তরে যেমন বিভিন্ন পদ ছিল। তৃণমূলের কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আবার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অবস্থায় সর্বভারতীয় পদগুলি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ারই কথা।
সর্বভারতীয় স্বীকৃতি যখন নেই, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সর্বভারতীয় সহসভাপতি ও সম্পাদকদের ওই পদেরও কোনো অস্তিত্ব নেই। তারপরও কেন ওই পদ আঁকড়ে প্রকাশ্যে সভা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তারা এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন।