নন্দীগ্রামের বহু বুথে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি
নিউজ ডেস্ক::নন্দীগ্রামের বহু বুথে প্রার্থীই দিতে পারল না বিজেপি। মনোনয়ন পর্ব শেষে স্ক্রুটনির সময়ই উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই তথ্যেই প্রশ্ন উঠে গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে বিজেপির সংগঠন নিয়ে। যে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়ে বিতর্কিত জয় পেয়েছিলেন শুভেন্দু, সেখানেই বিজেপি প্রার্থীহীন!
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে শাসকদলের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। শাসকের হিংসার বিজেপি ও অন্যান্য বিরোধীরা বহু আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারীরা। তা বলে যে নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারবে না, তা ভাবা যায়নি।
এখানে অবশ্য সন্ত্রাস, হিংসা বা ভয়ের প্রার্থী দেওয়া যায়নি সেই অভিযোগ কেউ করছেন না। এখানে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি। বিজেপির দলীয় প্রতীক না দিয়ে ৬৬টি আসনে নির্দলে ভরসা করতে চাইছে বলে জানানো হয়েছে। এটা নন্দীগ্রামকে তৃণমূল মুক্ত করার পরিকল্পনা বলে বড়াই করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, বিজেপি শুভেন্দু অধিকারীর নিজের গড়েই প্রার্থী জোগাড় করতে পারেনি। ফলে প্রমাণ হয়ে গেল একুশের নির্বাচনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিজেপি কোনো সংগঠনই তৈরি করতে পারেনি নন্দীগ্রামে। নন্দীগ্রামে দুটি ব্লক। সেখানে এক তৃতীয়াংশ আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
বিরোধী দলনেতার বিধানসভা কেন্দ্রেই এমন ছবি প্রকাশ্যে আসায় বিজেপিও কার্যত অস্বস্তিতে। যদিও শুভেন্দু অধিকারী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ১৭টি পঞ্চায়েতের ১১টিতে বিজেপি জিতবে। বাকি পাঁচটিতে তৃণমূল যাতে না জিততে পারে তার ব্যবস্থা করছি। নন্দীগ্রামকে তৃণমূল মুক্ত করার লড়াই এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে।
বিজেপি নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৮৫টি আসনের মধ্যে ৬৬টিতে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টির মধ্যে ৭টিতে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২টি আসনের মধ্যে একটিতেও প্রার্থী নেই বিজেপির।
অন্যদিকে কালিচরণপুরে ১৭টি আসনের মধ্যে সাতটিতে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি আসনে আবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পয়েছে তৃণমূল। দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭টি আসনের মধ্যে ৯টিতে বিজেপির প্রার্থী নেই। সামসাবাদে ১৮টির মধ্যে ১০টিতে প্রার্থী নেই, মহম্মদপুরে ১৭টির মধ্যে ৮টিতে প্রার্থী নেই।
এছাড়া নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭টির মধ্য়ে ৬টিতে এবং ভেকুটিয়ায় ২৫টির মধ্যে ২টিতে প্রার্থী নেই বিজেপির। পঞ্চায়েত সমিতিতেও ৩০টির মধ্যে সাতটিতে বিজেপির প্রার্থী নেই। নন্দীগ্রামে বিজেপির এই পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বলেন, ফাঁকা কলসির আওয়াজ বেশি তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে।
নন্দীগ্রামে বিজেপির এই প্রার্থী দেওয়া নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, বিজেপি অনেক জায়গায় প্রার্থী দিতে পারেনি, সেটা বিজেপির ব্যর্থতা। বিজেপি অনেক জায়গায় চেয়েছে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে প্রার্থী দিতে। কিন্তু যে নন্দীগ্রামে দিদিকে হারিয়েছেন, সেই নন্দীগ্রামে বিজেপির কেন প্রার্থী নেই, সেটা এখন বড় প্রশ্ন।
অধীর বলেন, বিজেপি দলে যারা যারা বড়ো পালোয়ান রয়েছেন, তাঁরাই এখন জবাব দেবেন। তাঁদের জবাব দিতে হবে, তাঁরা কি দিদিকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। এটা দিদিকে ম্যানেজ করার চেষ্টা হচ্ছে, না কি দিদির সঙ্গে লড়াই হচ্ছে। দিদির বিরুদ্ধে প্রকৃত লড়াই হচ্ছে একমাত্র বহরমপুরে।