বিশ্বনাথন আনন্দকে টপকে ভারতের ১ নম্বর দাবাড়ু গুকেশ ডি
নিউজ ডেস্ক::বিশ্বনাথন আনন্দকে সিংহাসনচ্যুত করলেন ১৭ বছরের গ্র্যান্ডমাস্টার গুকেশ ডি। আজারবাইজানের বাকুতে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে তিনি হারিয়ে দেন মিসরাতদিন ইস্কানদারভকে।
এই জয়ের সৌজন্যে ভারতের ১ নম্বর দাবাড়ু হয়ে গেলেন গুকেশ। চেন্নাইয়ের এই গ্র্যান্ডমাস্টার লাইভ রেটিংয়ে বিশ্বের প্রথম দশে ঢুকে পড়েন। এলো রেটিংয়ে তিনি টপকে যান আনন্দকে।
সোভিয়েত কিংবদন্তি গ্যারি কাসপারভের জন্মস্থানে বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে দেশের ১ নম্বর হওয়া নিঃসন্দেহে গুকেশের কাছে বড় কীর্তি। ধারাবাহিকভাবে সাফল্য পেয়েই তিনি এই জায়গায় পৌঁছে গেলেন। তবে এই প্রথম কোনও ভারতীয় যে আনন্দকে টপকে ভারতের ১ নম্বর দাবাড়ু হলেন তা নয়। ২০১৬ সালে পি হরিকৃষ্ণ এলো রেটিংয়ে টপকে গিয়েছিলেন আনন্দকে। তবে বেশিদিন জায়গা ধরে রাখতে পারেননি।
আজারবাইজানের ইস্কানদারভের বিরুদ্ধে ৪৪ চালেই জয় নিশ্চিত করে ফেলেন গুকেশ। অফিসিয়াল ফিডে রেটিং প্রকাশিত হবে সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ। গুকেশ সেই তালিকায় সেরা ভারতীয় হিসেবে প্রথম দশে থাকবেন বলে ফিডের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আনন্দের মতো গুকেশও চেন্নাইয়ের বাসিন্দা।
সাত বছর বয়সে দাবা খেলা শুরু। স্কুলে নজরে পড়েন কোচ ভাস্করের। তিনি গুকেশের প্রতিভা আঁচ করে তাঁকে প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। খেলা শেখার ৬ মাসের মধ্যে গুকেশ ফিডে-রেটেড প্লেয়ারের মর্যাদা পান। এরপর বিজয়ানন্দের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন গুকেশ। আন্তর্জাতিক সাফল্য পেতে বেশি সময় লাগেনি। ২০১৫ সালে এশিয়ান স্কুল চেস চ্যাম্পিয়নশিপে অনূর্ধ্ব ৯ বিভাগে খেতাব জিতে ক্যান্ডিডেট মাস্টার হন।
২০১৮ সালে এশিয়ান যুব দাবা প্রতিযোগিতায় পাঁচটি পদক জেতেন গুকেশ। ওই বছরই বিশ্ব যুব দাবায় অনূর্ধ্ব-১২ বিভাগের খেতাব জয়। ১১ বছর ৯ মাস ৯ দিনের মাথায় ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার হন গুকেশ। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ১২ বছর ৭ দিন ১৭ দিনের মাথায় হন গ্র্যান্ডমাস্টার। মাত্র ১৭ দিনের জন্য তিনি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার নজির গড়তে পারেননি। সেই রেকর্ড রয়েছে সের্গেই কারজাকিনের দখলে।
গত বছর চতুর্থ সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে গুকেশ ২৭০০ লাইভ রেটিংয়ের অধিকারী হন। গত বছরের ফিডে চেস অলিম্পিয়াডে তিনি দলগত ব্রোঞ্জ ও ব্যক্তিগত বিভাগে সোনা জেতেন। চলতি বছর জুনিয়র স্পিড চেস চ্যাম্পিয়নশিপ খেতাব জিতেছেন। গত মাসে তিনি টপকে গিয়েছেন ২৭৫০ ফিডে রেটিংয়ের মাইলস্টোন।
গুকেশ এখন বিশ্বের দাবাড়ুদের মধ্যে রয়েছেন নবম স্থানে। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আনন্দ নেমে গিয়েছেন দশে। ১৯৯১ সালে প্রথমবার আনন্দ বিশ্বের প্রথম দশ দাবাড়ুর মধ্যে এসেছিলেন। ১৯৮৭ সালের জানুয়ারি থেকে সমস্ত প্রকাশিত তালিকায় তিনিই সেরা ভারতীয় হিসেবে ক্রমতালিকায় জায়গা ধরে রাখেন। এবার গুকেশ বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন আনন্দকে।