ঠিক কত টাকা বেতন ছিল আটকে পড়া শ্রমিকদের
নিউজ ডেস্কঃ সতেরো দিন আটকে থাকার পরে মঙ্গলবার রাতে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা টানেল থেকে ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। সবাই নিরাপদে বেরিয়ে এসেছেন। শ্রমিকদের পরিবারগুলিও খুশি।যাঁরা টানেলে আটকে পড়েছিলেন, তাঁরাই একমাত্র ১৭ দিনের কঠিন পরিস্থিতির কথা বলতে পারবেন। তবে শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, দারিদ্রতার কারণেই বাড়ি থেকে এত দূরে ছুটে যাওয়া। ঝাড়খণ্ডের অনিলের মা হোন কিংবা পশ্চিমবঙ্গের পুরশুড়ার সৌভিকের মা, সবারই মুখে একই কথা।
১২ নভেম্বর দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ছুটে গিয়েছিলেন উত্তরকাশীতে। একের পর এক রাত পেরিয়েছে, বাড়ির ছেলের বেরিয়ে আসার আশায় দু-চোখের পাতা এক না করে বসে থেকেছেন। দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে উত্তরকাশীর দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়াও খুব একটা সহজ ছিল না।
১২ নভেম্বর হঠাৎই পরিবারের সদস্যের আটকে পড়ার খবরে চিন্তিত হয়ে পড়েন অন্য সদস্যরা। অনেক পরিবারের কাছে টিকিট কাটার মতো টাকাও ছিল না। এছাড়া পরিবারের সদস্যের বের হতে কত সময় লাগবে কিংবা উত্তরকাশীতে গিয়ে থাকতে কত টাকা লাগবে, তাও তাঁদের কাছে অজানা ছিল। অনেকেই বাড়ির মেয়েদের গয়নার মতো মূল্যবান সামগ্রী বিক্রি করে কিংবা বন্ধক রেখে উত্তরকাশীতে যান।সংবাদ মাধ্যমের কাছে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরের অখিলেশ কুমার বলেছেন, স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে নয় হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন। আর ছেলে মনোজিতকে যখন উদ্ধার করা হয়েছে সেই সময় তাঁর হাতে মাত্র ২৯০ টাকা অবশিষ্ট ছিল।
ঝাড়খণ্ডের রাঁচির বাসিন্দা অনিলের মা জানিয়েছেন, দারিদ্রতার কারণে ছেলে টানেল তৈরির কাজে যোগ দিয়েছিলেন। এই কাজে সে মাসে আঠারো হাজার টাকা পেত বলে জানিয়েছেন অনিলের মা। সুড়ঙ্গে আটকে পড়া কমবেশি সবারই বেতন ওই একই রকমের। যেমন পশ্চিমবঙ্গের পুরশুড়ার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার সৌভিক পেতেন ২০ হাজার টাকা। চাষের টাকায় সংসার না চলায় সৌভিক সেখানে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর মা।
বিভিন্ন রাজ্যের শ্রমিকরা চারধাম জাতীয় সড়ক প্রকল্পের কাজে যুক্ত রয়েছে। আটকে পড়া ৪১ জনের মধ্যে সব থেকে বেশি ছাড়খণ্ডের ১৫ জন শ্রমিক ছিলেন। ১.৫ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পের কাজের অনেকটাই শেষ হয়ে গিয়েছে।