এক ঢিলে অনেক পাখি মেরেছেন মমতা-কেজরিওয়াল
নিউজ ডেস্ক::যদিও মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে চান না। তিনি ইন্ডিয়া জোটকে জয়ীর আসনে দেখতে চান। তারপরেই এব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরবিন্দ কেজরিওয়াল খাড়গের নাম প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নেওয়ার পিছনে অন্য অনেক কারণ রয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেজরিওয়াল যুক্তি দিয়েছেন, খাড়গে জোটের সব থেকে সিনিয়র নেতা এবং তিনি দলিত সম্প্রদায়ের। যেখানে বিজেপির দলিতদের সব থেকে কাছের বলে দাবি করে, সেখানে দলিত সম্প্রদায়ের খাড়গেকে দিয়ে লড়াই চালানো যেতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে খাড়গের নাম প্রস্তাব করে মমতা-কেজরিওয়াল এক ঢিলে অনেক পাখি মেরেছেন।
মমতা ও কেজরিওয়াল খাড়গের নাম প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিয়ে জোটের প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসেবে রাহুল গান্ধী কিংবা প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর নাম প্রস্তাবের সম্ভাবনাকে শেষ করে দিয়েছেন। একদিকে যেমন রাহুল গান্ধী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বয়সে ছোট, ঠিক তেমনই দুই নেতানেত্রী কার্যত মনে করেন, মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাহুল গান্ধীর কারিশমার অভাব রয়েছে। তাঁরা রাহুল গান্ধীকে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না।
মমতা ও কেজরিওয়ালের উদ্যোগ নীতীশ কুমার কিংবা অখিলেশ যাদবের মতো আঞ্চলির সমবয়সীদের ইন্ডিয়া ব্লকের আহ্বায়ক বা প্রধানমন্ত্রীর মুখ হওয়ার সম্ভাবনাকে বাদ দিয়েছে। বলা ভাল ইন্ডিয়া ব্লকে নীতীশ কুমার, অখিলেশ যাদব, উদ্ধব ঠাকরে, শারদ পাওয়ার, এমকে স্ট্যালিনের মতো সম মর্যাদার অনেক প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী রয়েছেন। তাঁরা সবাই দেবগৌড়া হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।
প্রসঙ্গত ১৯৯৬ সালে অপ্রত্যাশিতভাবেই দেবগৌড়া প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অরবিন্দ কেজরিওয়াল আক্ষরিক অর্থে একে অপরকে ছাড়াও, উল্লিখিত সবাইকেই প্রতিযোগিতা থেকে আউট করে দিয়েছেন।
ইন্ডিয়া ব্লকের প্রথম সভা হয়েছিল পটনায়। সেই সময় পটনা জুড়ে লাগানো হয়েছিল এক সংকল্প, এক নীতীশ পোস্টার। অন্যদিকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা দাবি করেন, তাঁদের দিদিকেই প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। একইরকমভাবে অখিলেশ যাদবের সমর্থকরাও সেই দাবি করে থাকেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজেকে জোটের স্থপতি বলে দাবি করা নীতীশ কুমার জোটের আহ্বায়ক পদের থেকেই বেশি কিছু আশা করেছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেজরিওয়ালের পদক্ষেপ তাঁর সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেজরিওয়ালের গুগলিতে নীতীশ কুমার বা লালু যাদব, কেউই খুশি ছিলেন না। যে কারণে বৈঠক শেষ হওয়ার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে না থেকেই তাঁরা বেরিয়ে যান। লালু প্রসাদ যাদব জানেন, নীতীশ কুমার কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে না গেলে ছেলে তেজস্বী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না।