ভোটের আগে ডিএম বাংলো নিয়ে আলোড়ন বর্ধমানে!

0 0
Read Time:6 Minute, 8 Second

নিউজ ডেস্ক ::ডিএম বাংলো আছে। কিন্তু সেখানে থাকছেন না পূর্ব বর্ধমানের নতুন জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার। তিনি রয়েছেন দামোদর ভবনে।

জেলাশাসকের বাংলো থাকতে কেন তিনি দামোদর ভবনে? প্রশাসনিক সূত্রে মিলছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের মধ্যে রদবদল করেছিল রাজ্য সরকার। গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক ছিলেন পূর্ণেন্দু কুমার মাজি। তাঁকে বীরভূমের জেলাশাসক করা হয়।

বীরভূমের জেলাশাসক বিধানচন্দ্র রায় ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক হন। যদিও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ফের দুজনকে দুই জেলার জেলাশাসক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ণেন্দুকে করা হয়েছে স্টেট ফিশারিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের এমডি। বিধান বিদ্যুৎ দফতরের বিশেষ সচিব হয়েছেন।
রাজ্য সরকারের কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২২ মার্চ পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক ও জেলা সমাহর্তা করা হয়েছে কে রাধিকা আইয়ারকে। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখার সময়েও পূর্ব বর্ধমানের সরকারি ওয়েবসাইটে নেই তাঁর নাম।

এখনও বিধানচন্দ্র রায়ের নামই জেলাশাসক হিসেবে জ্বলজ্বল করছে সরকারি ওয়েবসাইটে। কেউ এটাকে হিউম্যান এরর হিসেবে সাফাই দিতেই পারেন। কিন্তু আলোড়ন ফেলেছে ডিএম বাংলোর বিষয়টি। ওয়ানইন্ডিয়া বাংলার প্রশ্নের উত্তরে নতুন জেলাশাসক জানিয়েছেন, তিনি দামোদর ভবনেই রয়েছেন।
জেলাশাসকের বাংলো থাকতে কেন তিনি দামোদর ভবনে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানচন্দ্র রায় যে কদিন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক হয়ে এসেছিলেন তিনিও দামোদর ভবনেই থাকতেন।

প্রশাসনিক সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, এখনও নাকি পূর্ণেন্দু কুমার মাজির দখলেই রয়েছে ডিএম বাংলো। স্বভাবতই গুঞ্জন, তাহলে কি ভোট মিটলেও ফের পুরানো পদে বহাল হবেন পূর্ণেন্দু, বিধানরা। যদিও এভাবে ডিএম বাংলো দখলে রাখা আইনবিরুদ্ধ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৮ এপ্রিল অবধি পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক ছিলেন মহম্মদ এনাউর রহমান। বিধানসভা নির্বাচনের মধ্য়েই পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক করে পাঠানো হয়েছিল প্রিয়াঙ্কা সিংলাকে। তখনও ভোটের পর এনাউরের পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক হয়ে ফেরার জল্পনা ছিল।

কিন্তু তা আর হয়নি। ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অবধি প্রিয়াঙ্কা সিংলাই পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের দায়িত্ব সামলেছেন। পরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন পূর্ণেন্দু কুমার মাজি, যিনি পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক ছিলেন। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এনাউর কিন্তু বদলির সাত দিনের মধ্যে বাংলো ছেড়ে দিয়েছিলেন নতুন জেলাশাসকের জন্য।
বিভ্রান্তি, চর্চা আরও বাড়ছে জেলাশাসকের বাংলোর কাছে গেলেই। সাধারণত গেটে লেখা থাকে জেলাশাসক ও জেলা সমাহর্তা, সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জেলার নাম। সেই সঙ্গে যিনি জেলাশাসক তাঁর নামও লেখা থাকা দস্তুর। কিন্তু বর্তমানে ডিএম বাংলোয় জেলাশাসকের নাম লেখা নেই। দুটি নেমপ্লেটের একটিতে লেখা জেলাশাসক ও জেলা সমাহর্তা, পূর্ব বর্ধমান। অপরটিতে লেখা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট অ্যান্ড কালেক্টর, পূর্ব বর্ধমান।

জেলাশাসকের নাম নেই পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের ওয়েবসাইটেও। রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের পরেও এভাবে জেলাশাসকের বাংলোয় নিজের পরিবারকে রেখে দেওয়া বেআইনি। এমনকী পূর্ণেন্দু কুমার মাজিকে ছুটির দিনে এই বাংলোয় দেখা গিয়েছে বলেও অভিযোগ। তিনি প্রভাব খাটিয়ে রাজ্যের শাসক দলের হয়ে লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশলেও পদক্ষেপ করতে পারেন বলে আশঙ্কা রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। অবিলম্বে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণের তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!