অবশেষে জেলে খাট পেলেন ‘হেভিওয়েট’ পার্থ
নিউজ ডেস্ক ::মেঝেয় জোড়া কম্বলকে সম্বল করে প্রেসিডেন্সি জেলে প্রথম রাত কোনওভাবে কাটিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তাও মাঝরাতে সে কি কাণ্ড! মেঝেতে শুয়ে পড়েছিলেন, কোনওরকমে উঠে বসলেও, আর উঠে দাঁড়াতে পারছিলেন না। তারপর কোনওরকমে উঠে কমোডে বসে বাকি রাতটা কাটাতে হয়েছিল তাঁকে। অবশেষে পার্থর কাতর আবেদনে সেলের ভিতরে আসে খাট। স্বস্তির ঘুম দেন পার্থ।
আদালতের নির্দেশে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রয়েছেন হেভিওয়েট প্রাক্তন মন্ত্রী। একদা তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ম্যান, মমতার মন্ত্রিসভারও নম্বর টু, তাঁর কী হাল, একেবারে সাধারণের মতো মেঝেতে শুয়ে কাটাতে হল রাত। হেভিওয়েটের জন্য তা না পেরে শেষে কমোডে বসে ঘুমোতে হয় তাঁকে। চেয়ার নেই, নেই খাট। বিলাসবহুল বাসস্থান ছেড়ে ৭৫-এর পার্থ-র কী করুণ হাল!
কর্পোরেট সংস্থায় উচ্চপদ থেকে দুঁদে নেতা ও মন্ত্রী হয়ে উঠেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর দুর্নীতিতে ফেঁসে তাঁকে নেমে আসতে হয়েছে একেবারে মাটিতে। চিরকালই হেভিওয়েট তিনি। ধারে ও ভারে। তাই তাঁর মতো মানুষের মেঝেতে শোওয়া খুবই কষ্টকর। বাধ্য হয়েই কমোড বসে কাটাতে হয়েছে রাত। ভোর হতে না হতেই ডাক পড়েছে চিকিৎসকের। তাঁরই বদন্যতায় সেলের ভিতরে এসেছে খাট।
জেল সূত্রেই জানা যায়, মেঝেতে শোওয়া বা বসতে তাঁর খুবই অসুবিধা হচ্ছিল। তাই মাঝরাত থেকে তিনি কমোডে বসেছিলেন। ওখানে বসেই একটুখানি ঝিমিয়ে নিয়েছে। তারপর সকাল হতে না হতেই জেলের চিকিৎসক ডাকিয়ে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করেন। চিকিৎসককে তিনি বলেন অসুবিধার কথা। নিজের শারীরিত স্থূলতার কথা উল্লেখ করে কাতরভাবে পার্থ জানান, মেঝেত বসতে পারছি না। বসলে উঠতে পারছি না।
তারপর সেই সুপারিশ মেনে মানবিক কারণে কারা দফতরের হেড অফিসে পাঠানো হয় প্রস্তাব। অনুমোদন মেলে। শনিবার সন্ধ্যায় খাট আসে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য। শনিবার রাতে তিনি ভালো করেই ঘুমিয়েছেন। আগের দিন বিশেষ কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি তিনি। শুধু একজন মহিলা আইনজীবী এসেছিলেন, তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর জেলরক্ষীদের সঙ্গেই নিজের সেলে চলে আসেন।
এদিনই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সেলের সামনে একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। জেলের বিভিন্ন সেলে সিসি ক্যামেরা থাকলেও ওই দু-নম্বর সেলে, যাকে ‘পয়লা ২২’ বলা হয় জেলের কথায়, সেখানে কোনও সিসি ক্যামেরা ছিল না। প্রাক্তন মন্ত্রীর সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবেই সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
পার্থ যথারীতি ব্রেকফাস্টে চা আর পাউরুটি খেয়েছেন। দুপুরে ভাত-ডাল-সবজি দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, আমি দুপুরে ভাত খাই না। তিনি রুটি চেয়ে পাঠান। ফের তাঁকে ব্রেকফাস্টের খাবারই দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় চা বিস্কুট খান পার্থ। এদিনই পার্থ চট্টোপাধ্যায় আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।