নিরামিষ ভোজনই ব্রহ্মচর্যে মনোযোগী করেছিল মহাত্মা গান্ধীকে

0 0
Read Time:4 Minute, 47 Second

নিউজ ডেস্ক ::ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম পথিকৃত মহাত্মা গান্ধী।

জাতির জনক। তাঁর হাত ধরেই গোটা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়েছিল স্বাধীবনতা আন্দোলন। অহিংসার পথে তিনি দেশের স্বাধীনতা আনতে চেয়েছিলেন। সারাজীবন মানুষটা সাধারণের মতো জীবনযাপন করে দেশের স্বাধীনতায় ব্রতী হয়েছিলেন। কেমন ছিল তাঁর জীবনশৈলী, তিনি কী খেতেন, কেমনভাবে কাটাতেন। তা নিয়েই এই সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রাণপুরুষ মহাত্মা গান্ধী দেশকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে যে পথে হেঁটেছিলেন, তাঁর প্রতিদিনকার জীবনযাপন ও ডায়েটও ছিল তেমনই। তিনি বড্ড বেশি ‘স্বদেশী’। আইনজীবী থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে উঠেছিলেন। লিখেছিলেন বহু বই। কিছু বইয়ে তিনি খাবারের সংস্কারের কথা লিখেছেন। নিরামিষাশী গান্ধীর নিরামিষাশী হয়ে ওঠার নৈতিক ভিত্তিও বর্ণনা করেছিলেন তাঁর লেখনীতে।

জীবনযাপনে নিরামিষাশী মহাত্মা গান্ধী। তাঁর লেখনীতে উঠে এসেছিল সেই কাহিনি। মহাত্মার লেখা ‘আহার’, ‘খাদ্য সংস্কার’, ‘নিরামিষার নৈতিক ভিত্তি’ ও ‘স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি’তে উদ্ভিদভিত্তিক খাবারের প্রতি তাঁর ভালোবাসাকে তুলে ধরেছিলেন। তিনি খেতেন স্বাত্ত্বিক খাবার। ফল ও ভেষজ খাবারই থাকত তাঁর মেনুতে।

মহাত্মা গান্ধীর প্রিয় খাবার ছিল কলা ও বাদামের পেস্ট। দুপুরের খাবারের মেনুতে থাকত প্রচুর স্থানীয় শস্য, ডাল, শাকসবজি। তিনি ছাগলের দুধ পান করতেন। তিনি এড়িয়ে চলতেন চিনি। তাঁর অনুগামী ও অনুসারীদেরও তিনি চিনি এড়িয়ে চলতে উৎসাহিত করতেন। ‘থাগ্গু করে লাড্ডু’-র পিছনের লোকটিও গান্ধীও অনুগত ছিলেন। যিনি স্বাদ ভালো হওয়ার জন্য লাড্ডুতে চিনি মেশাতেন। এই কারণেই তাঁর লাড্ডুকে ‘থাগ্গু কে লাড্ডু’ নাম দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, ‘থাগ্গু’ এসেছে ‘ঠগ’ শব্দ থেকে, যার অর্থ প্রতারণা।

ছোটোবেলায় মহাত্মা গান্ধী পরীক্ষামূলকভাবে মাংস খান। তাঁর জন্মগত কৌতুহল থেকেই তিনি মাংস খেয়েছিলেন। তাঁর নিরামিষ ভোজনের ধারণা এসেছিল পরিবার থেকেই। তাঁর রাজ্য গুজরাতে বেশিরভাগ হিন্দু ছিলেন নিরামিষভোজী। গান্ধী পরিবারও এর ব্যতিক্রমী ছিল না। লন্ডনে পড়তে যাওয়ার আগে মহাত্মা গান্ধী তাঁর মা পুতলিবাই এবং চাচা বেচারজির কাছে প্রতিজ্ঞা করেন যে তিনি মাংস, মদ ও নারীসঙ্গ থেকে বিরত থাকবেন।

তিনি সেই প্রতিজ্ঞা পালন করেছিলেন। তার মাধ্যেই তিনি খাদ্যাভ্যাসের একটি দর্শন তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি পূর্ণ নিরামিষভোজী হয়ে ওঠেন। তিনি ‘দি মোরাল বেসিস অফ ভেজিটেরিয়ানিজম’ বইটির পাশাপাশি বেশ কিছু নিবন্ধ লেখেন। এইসব লেখা ছাপা হয় লন্ডনের নিরামিশভোধী সংগঠন লন্ডন ভেজিটেরিয়ান সোসাইটির প্রকাশ ‘দি ভেজিটেরিয়ান’-এ। মহাত্মা গান্ধী নিরামিষ খাওয়ার পক্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গেও যোগ দেন। তিনি বলেন নিরমিষ খাবার শুধু শরীরের চাহিদাই মেটাবে না, অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যও পূরণ করবে। তাঁর জীবনীতে লেখা রয়েছে, নিরামিষভোজনই ছিল ব্রহ্মচর্যে তাঁর গভীর মনোযোগে সূচনায়।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!