ঈশ্বরপুত্র যীশুর মৃত্যুকালীন সাতটি বাণী
নিউজ ডেস্ক: রাজার নির্দেশে ঈশ্বর পুত্র যীশুকে ক্রশবিদ্ধ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।যখন যীশুর সমস্ত শরীর থেকে রক্ত ঝরছে তখন জীবন থাকাকালীন ঈশ্বর পুত্র যীশুর মুখনিঃসৃত সাতটি বাণীই জানিয়ে দেয় যীশুর প্রকৃত সত্য।
মৃত্যুকালে তাঁর হত্যাকারীদের দিকে তাকিয়ে যীশু বলেন,
“পিতা,ইহাদের ক্ষমা করো।কেননা ইহার জানেনা ইহারা কি করিতেছে।”এই প্রথম বাণীর প্রেক্ষিতেই বলাহয় বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ক্ষমাসুন্দর যীশু।
দ্বিতীয় বাণীতে বলেন,যীশুর সঙ্গে আরও যে দুজনকে হত্যা করা হয়েছিল,তারা মৃত্যুকালর যীশুকে বলে,তুমি তো ঈশ্বর এর পুত্র।তাহলে কেন তোমার এই পরিণাম।আমরা না হয় কর্মফল ভোগ করছি।যীশু বলেন,তোমরাও ঈশ্বরের পুত্র।তারপরেই তাঁর দ্বিতীয় বাণী উচ্চারিত হয় -“অদ্যই তুমি পরম দেশে আমার সহিত মিলিত হইবে।”
এই অংশকে খ্রিস্ট ধর্মের মানুষের বলেন ‘,পরিত্রানের বাণী’।
এর পরে আসে তাঁর তৃতীয় বাণী।যীশুর মৃত্যুকালে তাঁর মাতা ও এক শিষ্য ওই দস্যুদের পাশেই চোখের জল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।তখন যীশু মাতার দিকে তাকিয়ে শিষ্যের উদ্দেশ্যে বলেন,”হে নারী,ওই দেখো তোমার পুত্র।” আর শিষ্যের দিকে তাকিয়ে বলেন,”ওই দেখো তোমার মাতা।” এই বানীকেই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ‘আবেগ’ বলা হয়।
এরপরে নিদারুণ যন্ত্রনায় যীশু কাতর।পরে সন্ধ্যার সময় চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসে।চারিদিকে নিস্তব্ধতা।যীশু বুঝতে পারছেন তাঁর সময় আসন্ন।যীশু বলেন চতুর্থ বাণী -“ঈশ্বর আমার,ঈশ্বর আমার,কেন তুমি আমাকে পরিত্যাগ করিয়াছ?”
নিদারুণ যন্ত্রনা থেকেই যীশুর এই বাণীকে বলা হয় ‘নিদারুণ যন্ত্রণা।’
পঞ্চম বাণীতে আছে সমগ্র বিশ্বের জন্য যীশুর দুঃখভোগের কথা। রাজার নির্দেশে যীশুকে জলপান করতে দেওয়া হয় নি।আঙুরের রসের সঙ্গে বিষময় তিক্ত মিশিয়ে তার মুখে জোর করে ঢালা হয়।যীশু ঈশ্বরের আগমন বার্তা শুনতে পাচ্ছেন।সমস্ত মানব জাতির পাপ তিনি নিজে এখানে গ্রহণ করেন।আর শেষ মুহূর্তে বলেন,”আমার পিপাসা পাইয়াছে।”
সমগ্র মানব জাতির হয়ে তিনি এই দুঃখভোগ করলেন।তাই এই বাণীকে বলা হয় ‘দুঃখভোগ’।
যীশুর ষষ্ঠ বাণীতে তিনি ঈশ্বরের প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করেন।তিনি প্রায়শ্চিত্ত করতে চাইছেন ঈশ্বরের কাছে।প্রবল তৃষ্ণায় কাতর হয়ে বাধ্য হয়ে ওই তিক্ত পানীয় পান করে তিনি উপলবদ্ধি করছেন,সময় আসন্ন।তিনি সমস্ত পৃথিবীর পাপ গ্রহণ করে ষষ্ঠ বাণীতে বলেন ‘সমাপ্ত হইল।”
এই দুঃখে ভরা,আনন্দে ভরা পৃথিবীর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক তিনি ছিন্ন করতে চলেছেন।এই ষষ্ঠ অধ্যকে বলে ”পাপার্থে এই যজ্ঞ।” ,কারণ পৃথিবী একটা যজ্ঞের স্থল।যীশু সেই যজ্ঞের সমস্ত পাপ নিজে গ্রহণ করলেন।
এবার শেষ বাণী,সপ্তম বাণী।যীশুকে ডাকছেন তাঁর পিতা।তিনি কাতর।গলা দিয়ে স্বর বের হচ্ছে না।কিন্তু তাঁর একদম কাছে যারা আছে, তারা শুনতে পেলেন যীশু আকাশের দিকে তাকিয়ে বলছেন, ” পিতা, তোমার হস্তে আমি আত্মসমর্পণ করি।”
ঈশ্বর পুত্র যীশু চোখ বুঝলেন।সত্যি তিনি ঈশ্বরের পুত্র।তাই খ্রিস্টানরা এই বাণীকে বলেন,’ঈশ্বর পুত্র।’
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন,যীশু যথার্থ একজন অবতার।তিনি রক্তের পৃথিবীতে আনলেন প্রেমের বাণী,মানবতার বাণী।