অনুব্রতর জেলায় রাস্তায় বাঁশ ফেলে ‘দিদির দূত’কে আটকে দিল স্থানীয় বাসিন্দারা
নিউজ ডেস্কঃ ‘দিদির দূত’ প্রকল্প অত্যন্ত সুকৌশলে প্রয়োগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানতেন প্রতিবাদ সর্বত্র হবে। তবুও তিনি তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রী,আমির-উমরাহদের পাঠিয়েছেন। কারণটা ব্যাখ্যা করেছেন, প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেছেন,মনের ক্ষোভ বের করে দিলেই ক্ষোভ কমে যাবে। রবিবার খোদ অনুব্রতর জেলায় মানুষ সাহস করে রাস্তায় বাঁশ ফেলে দিদির দূতের পথ আটকে দিলেন। তৃণমূল নেতা ও বিধায়ক বিকাশকে আটকে দেওয়া হলো।
সেখানে ‘এলেমা’ গ্রামে ঢুকতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রামবাসীদের একাংশ গ্রামে ঢোকার মুখে বাঁশ, গাছ ফেলে রেখে বিধায়কের পথ আটকে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রতিশ্রুতি দিয়েও গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেননি বিধায়ক। এক বিক্ষোভকারীর কথায়, ‘‘মাপজোকের কাজও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তা আজ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। তাই, বাঁশ দিয়ে রাস্তা আটকে রেখেছিল।’’ এই সাহসের পিছনে অন্যতম কারণ নিশ্চই এটা যে বীরভূমের বেতাজ বাদশা এখন কারাগারে।
পরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি গ্রামে ঢোকেন। এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘বিধায়ক দশ দিনের মধ্যে পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’’ গ্রাম পরিদর্শনের পর বিকাশ বলেন, ‘‘খানিক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তবে এখন গ্রামবাসীরা বুঝেছেন। বিরোধীরা ওঁদের ভুল বোঝাচ্ছেন। এই গ্রামবাসীরা তো আমারই লোক। এঁদের জন্য আমি কাজ করব না! তাই হয় না কি? আমি কথা দিয়েছি, পানীয় জলের সমস্যা আমিই মেটাব।’’ বিক্ষোভের ঘটনার তৃণমূলের একাংশ জড়িয়ে থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিকাশ।
এই বিক্ষোভ যে ধীরে ধীরে তুষের আগুনের মতো জ্বলছিল তা আগেই টের পাওয়া গিয়েছিল। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত থেকে শুরু রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগসুবিধা না-পাওয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, মাস দুয়েক আগে মহিলা তৃণমূলের ‘চলো গ্রামে যাই’ কর্মসূচিতেই তার আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। শাসকদলের ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতেও তার বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। কেউ আবাস যোজনার বাড়ি, বার্ধক্যভাতা, বিধবাভাতা না-পাওয়া নিয়ে, কেউ আবার একশো দিনের প্রকল্পে কাজ না-পাওয়ার অভিযোগ তুলছেন। পরে অবশ্য সমস্যা মিটে গেছে বলেই বিধায়কের বক্তব্য।