নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শিক্ষা প্রসারকে বিদ্যাসাগরের শিক্ষার সঙ্গে তুলনা করলেন ইডি!
নিউজ ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শিক্ষা প্রসারকে বিদ্যাসাগরের শিক্ষার সঙ্গে তুলনা করলেন ইডির আইনজীবীরা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলায় ইডি এমন এক প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন তাতে প্রশ্ন উঠে গেল রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে।
ইডির আইনজীবী আদালতে এক ব্যাখ্যায় জানান, বিদ্যাসাগর শিক্ষাকে ১০০ বছর এগিয়ে দিয়েছিলেন। আর রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী রাজ্যের শিক্ষাকে ১০০ বছর পিছিয়ে দিয়েছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জমিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে ইডি আদালতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গে উত্থাপন করলেন।
মঙ্গললবার শুনানিতে দুটি তারিখ উল্লেখ করে ইডির আইনজীবী জানান, ফিরোজ এডুলজি বলেন, এই দুই দিন দু’জন ‘মহান’ পুরুষ জন্মেছিলেন। এক জন বিখ্যাত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, অন্যজন কুখ্যাত পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যিনি বাংলার শিক্ষাকে দায়িত্ব নিয়ে শেয করে দিয়েছেন। প্রথম জন শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন ১০০ বছর, আর দ্বিতীয় জন পিছিয়ে দিয়েছেন ১০০ বছর।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী জীবনকৃষ্ণ শ্রীবাস্তব এরপর পাল্টা প্রশ্ন ছোড়েন, বিদ্যাসাগর অসামান্য কাজ করেছেন। সে প্রসঙ্গ আলাদা। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায় কী করে শিক্ষা ব্যবস্থাকে পিছিয়ে দিয়েছেন? ইডির আইনজীবীর সঙ্গে যখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীর বাদানুবাদ চলছিল শিক্ষা ব্যবস্থাকে পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে, তখনই পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন ভার্চুয়ালি।
রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে খোদ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে সারা দিন-রাতভর জেরার পর গ্রেফতার করা হয়। গত ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলার বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর থেকেই ইডি হেফাজত, সিবিআই হেফাজত ও জেল হেফাজতে কাটছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জীবন।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় এরপর বারবার জামিনের আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু বিচারক জামিনের আবেদনে সাড়া দেননি। এদিনও ফের তিনি জামিনের আবেদন করেছেন। সেই মামলাতেই বিদ্যাসাগরের সঙ্গে তুলনা করে ইডির আইনজীবী বলেন বিদ্যাসাগরের বাংলায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে ১০০ বছর পিছিয়ে দিয়েছেন এই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এই বলেই ইডি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের বিরোধিতা করে।
আর ইডির আইনজীবীর বিরোধিতায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী বলেন, এটা সংগঠিত অপরাধ নয়। আর্থিক তছরূপের মামলা কেবলমাত্র ইডি তদন্ত করতে পারে। আমরা জামিনের আবেদন করছি। ইডির মামলা থেকে অব্যহতির আবেদন পরে জানানোর কথা বলেন তিনি। এরপর বিচারক বলেন, এইভাবে তো অনন্তকাল চলতে পারে না। এরপরই অব্যাহতির আবেদন প্রত্যাহার করে নেন ইডির আইনজীবী।