তৃণমূলের মারে কি বোধোদয় হবে বাম-কংগ্রেসের
নিউজ ডেস্ক : পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম মেদিনীপুরে সাগরদিঘি মডেলে আস্থা রাখেনি। কংগ্রেসকে পাত্তা না দিয়ে বামফ্রন্ট নিজেদের মতো প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ভোট ঘোষণার পরদিনই। কিন্তু মুর্শিদাবাদ কি আস্থা রাখবে সাগরদিঘি মডেলে। সার্বিকভাবে না হলেও মুর্শিদাবাদ জেলায় যে বাম-কংগ্রেস জোট বাঁধতে পারে তার আভাস মিলল শনিবার।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শুরু হতেই উত্তেজনার পারদ চড়ছে। জেলায় জেলায় অশান্তি শুরু হয়েছে। বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান, বীরভূম থেকে শুরু করে একাধিক জেলায় বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর অশান্তি মাত্রা ছাড়িয়েছে মুর্শিদাবাদে।
মুর্শিদাবাদের ডোমকলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে সাংঘাতিক। মুর্শিদাবাদেরই খড়গ্রামে গতকাল কংগ্রেসকর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। তারপর এদিন ডোমকলে মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ডোমকল। ডোমকলের বিডিও অফিসের গেট সকাল থেকেই তালা ঘেরাও করে রাখে তৃণমূল।
সিপিএম ও কংগ্রেস প্রার্থীরা সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়ন জমা গিতে গেলে তাঁদের মারধর করা হয়। মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এর ফলে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ক্যামেরায় ধরা পড়ে বাঁশ, লাঠি দিয়ে মারধরের ছবি। রণক্ষেত্রের চেহারা এলাকা।
শাসক তৃণমূলের দাপটে পিছু হটলে বাম-কংগ্রেস প্রার্থীরা পরে একজোট হয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান। পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়। বাম ও কংগ্রেস এক জোট হতেই পিছু হটতে বাধ্য হয় শাসকদল তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। তৃণমূলের তরফে এই আক্রমণ ও মনোনয়নে বাধাদানের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের সাগদিঘিতে তিন মাস আগে উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটবদ্ধ হয়ে হারিয়ে দিয়েছিল তৃণমূলকে। তৃণমূলের জেতা আসনে বাম-কংগ্রেসের জয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আশার আলো দেখিয়েছিল এই সাগরদিঘি মডেল। যতই সাগরদিঘির বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন, তৃণমূলকে পরাস্ত করতে মুর্শিদাবাদ যে এই মডেল প্রয়োগের প্রত্যাশী, তা এদিন আবার বুঝিয়ে দিল।
এদিনের সম্মিলিত প্রতিরোধের পরে কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব আশাবাদী একসঙ্গে লড়তে পারলে তৃণমূলকে আবার হারানো যাবে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ইতিমধ্যে নীচুতলার কর্মীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন। বার্তা দিয়েছেন বামেদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চলার ব্যাপারে। কিন্তু এখনও বামেদের সাড়া মেলেনি।
তবে রাজ্যে গত কয়েকমাস ধরে সাগরদিঘি মডেলে ভোট হতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়ালেও পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার পর কিন্তু সেই ছবি দেখা যায়নি। বামেরা তড়িঘড়ি এককভাবে সমস্ত আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণায় ধাক্কা খেয়েছে এই মডেল। কংগ্রেসকে পাত্তা না দিয়েই পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমানে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেয় বামেরা।