ইসরোর চন্দ্রযান-৩ চন্দ্রাভিযানে কঠিন পরিস্থিতির মুখে
নিউজ ডেস্কঃ ভারত চাঁদে পাড়ি দিয়েছে নতুন স্বপ্ন নিয়ে। ২০১৯-এর ব্যর্থতা মুছে ফেলে ২০২৩-এ ইতিহাস রচনা করার প্রত্যাশী ভারত। ইসরোর চন্দ্রযান-৩ চাঁদের পথে সিংহভাব পথ পাড়ি দেওয়ার পর এখন সবথেকে কঠিন পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে। চন্দ্রযান-৩ তার জটিল অপারেশন কীভাবে সফল হয়, সেদিকে তাকিয়ে গোটা ভারতবাসী।
চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি থেকে মাত্র ১৭৭ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। বুধবারই তা নেমে আসবে চাঁদের ১০০ কিলোমিটার কক্ষপথে। তারপরই শুরু হবে ল্যান্ডার বিক্রম বিচ্ছিন্নকরণের প্রক্রিয়া। ল্যান্ডার বিক্রম রোভার প্রজ্ঞানকে নিয়ে এবার ছুটে যাবে চাঁদের মাটি ছুঁতে। আর চন্দ্রযানৃ-৩ ১০০ কিলোমিটার কক্ষপথে থেকে আর একটু উঠে ১৫০ কিলোমিটার বৃত্তাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করবে চাঁদকে।
ইসরোর বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের ১০০ কিলোমিটার কক্ষপথে চন্দ্রযান-৩ থেকে বিক্রম ও প্রজ্ঠানকে পৃথকীকরণ করাটাই সবথেকে কঠিন চ্যালেঞ্জ চাঁদের কাছে। তার পরবর্তী চ্যালেঞ্জ চাঁদের মাটি স্পর্শ করা। এই দুই জটিল অপারশেন সাকসেসফুল হলেও তৈরি হবে নয়া ইতিহাস। চাঁদের মাটিতে প্রথমবার সফল অবতরণ করবে ভারত।
বুধবার ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো চাঁদের ১০০ কিলোমিটার কক্ষপথে নামতে গুরুত্বপূর্ণ কৌশল অবলম্বন করবে। তারপরই শুরু হবে চাঁদের মাটিতে বড়ো অপারেশনের প্রক্রিয়া। ১৪ জুলাই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণের পর ৩৩ দিন কেটে গিয়েছে। এই ৩৩ দিনে চন্দ্রযান-৩ পৌঁছে গিয়েছে চাঁদের দোরগোড়ায়।
৫ অগাস্ট চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে চন্দ্রযান-৩। তারপর ধাপে ধাপে কক্ষপথ কমাতে কমাতে এখন চাঁদের মাটি থেকে ১৭৭ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে। ১৬ অগাস্ট কক্ষপথ কমিয়ে চন্দ্রযান ৩-কে ১০০ কিলোমিটারx১০০ কিলোমিটার কক্ষপথে আনা হবে। উপবৃত্তাকার কক্ষপথ হবে সম্পূর্ণ বৃত্তাকার।
এই কৌশলটিকে বলা হচ্ছে অরবিট সার্কুলারাইজেশন। এই কৌশলে মহাকাশযানের ইঞ্জিনগুলিকে একটি নির্দিষ্ট উপায়ে ধাক্কা দিয়ে পথটিতে গোলাকার বা বৃত্তাকার করা হবে। এটি মহাকাশযান মিশনের সবথেকে চ্যালেঞ্জিং পার্ট বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এই মিশনে সফল হলেই শুরু হবে অবতরণের প্রক্রিয়া।
এরপর চাঁদের ১০০ কিলোমিটারx৩০ কিলোমিটার কক্ষপথে প্রবেশের পর জেট প্রপালশন মডিউল থেকে আলাদা হয়ে যাবে ল্যান্ডার। এক্ষেত্রে বিক্রম ল্যান্ডার প্রজ্ঞান রোভারকে নিয়ে নামবে চাঁদের মাটিতে। ২৩ অগাস্ট সেই মাহেন্দ্রক্ষণের দিকেই তাকিয়ে এখন গোটা বিশ্ব। ভারত চাঁদের মাটিতে নিজের নাম খোদাই করে আসতে পারে কি না, তা-ই দেখার। অনেক স্বপ্ন, আর একটা ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে ভারত।