এলআইসির এখন পর্যন্ত ডুবেছে ৩২০০ কোটি টাকা: তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র
নিউজ ডেস্ক : আদানির শেয়ার ধসের কারণে এখন পর্যন্ত ৩২০০ কোটি টাকা ডুবে গিয়েছে এলআইসির! শুধু গৌতম আদানি নন, এই ইস্যুকে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট তুলে ধরে কেন্দ্রের মোদী সরকারকেও এক হাত নিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি এই বিষয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের জবাবদিহি চেয়েছেন।
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সামনে আসার পর গৌতম আদানি গোষ্ঠী শেয়ারে ধস নেমেছে। আদানি গোষ্ঠীর বাজার মূল্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে গিয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর জন্য এলআইসির এখন পর্যন্ত ৩২০০ কোটি লোকসান হয়েছে। ভারতীয় জনগণের টাকা ডুবে গিয়েছে। এবার কী হবে, সে কথা কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে শুনতে চান তাঁরা।
শুক্রবার এক টুইট বার্তায় হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট আর এলআইসির টাকা ডুবে যাওয়া নিয়ে আদানিদের সঙ্গে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে একহাত নিয়েছেন তিনি । সেইসঙ্গে তিনি একটি স্ক্রিনশটও শেয়ার করেন। একটি সংবাদ প্রতিবেদন দেখা যায় সেই স্ক্রিনশটে। সেখানে বলা হয়েছে- “আদানি গ্রুপের পাঁচটি বড় কোম্পানিতে ভারতীয় জীবন বিমান নিগমের শেয়ারহোল্ডিংয়ের বাজার মূল্য প্রথমবারের মতো তার ক্রয় মূল্যের নীচে নেমে গিয়েছে।” প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সেই পাঁচটি কোম্পানি হল আদানি এন্টারপ্রাইজ, টোটাল আদানি গ্যাস, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি ট্রান্সমিশন এবং আদানি পোর্টস নামক সংস্থা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক শর্ট-বিক্রেতা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে ম্যানিপুলেশন ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয় গৌতম আদানির বিরুদ্ধে। সেই রিপোর্ট সামনে আসার পর জাতীয় রাজনীতিতে ঝড় উঠে যায়। আদানি গ্রুপ বিলিয়ন বিলিয়ন লোকসান করেছে। এই সপ্তাহে তার ১০টি কোম্পানির সম্মিলিত ইক্যুইটি বাজার মূল্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে যায়। আদানি বিশ্বের সবথেকে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ২ নম্বর থেকে ২৯ নম্বরে নেমে যান৷
আদানি গোষ্ঠী এই অভিযোহ অস্বীকার করেছে এবং বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করার জন্য আইনি ব্যবস্থা পর্যন্ত নিয়েছে। আর এরপর আদানি ইস্যুতে বিরোধীরা সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। এই আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছেন কংগ্রেসের সাংসদ রাহুল গান্ধী এবং তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তাঁরা কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজ রাজ্য গুজরাটের বাসিন্দা আদানির মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি তুলেছেন।
ভারতের জীবন বিমা নিগম ও ভারতের স্টেট ব্যাঙ্ক উভয়ই আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার ধসে প্রভাবিত হওয়ায়, বিরোধীরা যৌথ সংসদীয় তদন্ত বা জেপিসি দাবি করেছে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছেছে। সুপ্রিম কোর্টেও সরকারকে নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা পর্যালোচনা এবং শক্তিশালী করার জন্য একটি প্যানেল গঠনের সুপারিশ করেছে।