মহালয়ার দিন কি কেবলই পিতৃপক্ষের অবসান ঘটে

0 0
Read Time:4 Minute, 5 Second

নিউজ ডেস্কঃ মহালয়া চলে আসা মানেই, দেবীর মর্তে আগমন প্রায় ঘটে যাওয়া। নবরাত্রির সূচনা হয়ে যাওয়া। কিন্তু এই বিশেষ দিনটির ইতিহাস কী? জানেন আপনি?

মহালয়া তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান ঘটে। অমাবস্যার অন্ধকার পেরিয়ে সূচনা হয় দেবীপক্ষের। এই মহালগ্ন মহালয়ার বার্তা পাঠায়। পিতৃপক্ষ থেকে দেবীপক্ষের এই উত্তরণটাকেই বলা হয়ে থাকে মহালয়া। এই শব্দ, অর্থাৎ মহালয়ার অর্থ হচ্ছে মহান আলয়, যা বোঝানো হয় পিতৃলোককে। এই দিনটি পিতৃ এবং মাতৃ পূজার সন্ধিক্ষণ। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের শেষ হয়ে দেবীপক্ষ সূচনা হয়।

মহালয়া এসে যাওয়া মানেই পুজো এসে যাওয়া। এর কটাদিন। স্কুলে কলেজে যেতে হলেও কদিন, পড়ায় আর মন বসে না। পাড়ায় পাড়ায় প্যান্ডেলের শেষ মুহূর্তের কাজ চলা, এখন তো আবার কোথাও কোথাও উদ্বোধন হয়ে যায়। গোটা বাংলা যেন সেজে ওঠে দেবীকে বরণ করে নেওয়ার জন্য। গ্রামের গঞ্জে, নদীর ধারে, পুকুর পাড়ে ভরে যায় কাশফুলে। আকাশে চলে মেঘ রোদের খেলা। এর সমস্ত কিছুই যেন বয়ে আনে দেবীর আগমন বার্তা। ফলে এই দিনটি যে দুর্গাপুজোর সূচনা ঘটিয়ে দেয় সেটা বলাই যায়। কাউন্টডাউন শুরু হয়ে যায় ‘মা আসছে’ এর!
মহালয়ার ছয়দিন পরেই সপ্তমী। ক্রেতা যুগে রামচন্দ্র রাবণকে বধ করার জন্য অসময়ে দেবীর আরাধনা করেছিলেন। তাঁর আশীর্বাদ পেয়ে লঙ্কা বিজয় করতে চেয়েছিলেন। তাই তো শারদীয়া দুর্গোৎসবকে অকাল বোধন বলা হয়ে থাকে। এর চৈত্র মাসে যে দুর্গাপুজো হয়, সেটাই আসল দুর্গাপুজো, তবে আমরা তাকে বাসন্তী পুজো বলে থাকি।

কোনও শুভ কাজ আরম্ভ করতে হলে আগে পূর্বসূরিদের উদ্দেশ্যে সনাতন ধর্ম অনুযায়ী উত্তরসূরিদের তর্পণ করতে হয়। অঞ্জলি সহ অন্যান্য নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। খুশি করার ওপর নাম হল তর্পণ। শ্রীলঙ্কা বিজয়ের আগে রামচন্দ্র সেটাই করেছিলেন মহালয়ার দিন। মহালয়ার পূণ্য প্রভাতে বহু বছর ধরে আমাদের দেশে কোটি কোটি মানুষ ময়া দত্তেন তোয়েন তৃপ্যান্ত ভুবনত্রয়ম, আব্রহ্ম স্তম্ভ পর্যন্তং তৃপ্যন্তু মন্ত্র উচ্চারণ করে তিন গণ্ডুষ জল প্রদান করেন তাঁদের পূর্বসূরিদের উদ্দেশ্যে।
অন্যদিকে, এদিন দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এমনটাই মনে করা হয় পুরাণ মতে। মহিষাসুরকে ব্রহ্মা বর দিয়েছিলেন যে তাঁকে কোনও মানুষ বা দেব হত্যা করতে পারবে না। এর ফলে সে হয়ে ওঠে অসীম ক্ষমতাশালী। তিনি দেবলোক থেকে দেবতাদের তাড়িয়ে সেখানের রাজা হয়ে বসতে চান। তখন মহামায়া নামক এক দারুন নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন ত্রিদেব, ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর। তাঁরা দেবীকে দিলেন নানান অস্ত্র। এরপর দেবী সুসজ্জিত হয়ে নয়দিন ধরে মহিষাসুরের সঙ্গে লড়াই করে তাঁকে অবশেষে পরাজিত করেন এবং সঙ্গে হত্যাও।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!