আন্তর্জাতিক যোগ দিবস(২১জুন) – একটি প্রতিবেদন।
শাশ্বতী চ্যাটার্জি::প্রাচীন সভ্যতার দেশ ভারতবর্ষ।বেদ ও বেদান্ত বা উপনিষদ ভারতীয় তথা বিশ্ব সভ্যতার ভিত্তি।সেই উপনিষদের যুগ থেকেই ভারতের সবুজ অরণ্যের মধ্যে প্রাজ্ঞ ঋষিরা পদ্মাসনে,ভদ্রাসন,গোমুখাসন বা অন্য কোনো আসনে বসে মেরুদন্ড সোজা করে ধ্যানস্থ হতেন।আত্মার সাথে পরমাত্মার মিলন ঘটানোই ছিল সেই ঋষিদের মূল লক্ষ্য।
এই চঞ্চল,চলমান বিশ্ব থেকে নিজের মনকে একদম একটি বিন্দুতে নিয়ে এসে একনিষ্ঠ মনে পরমাত্মার সন্ধান ছিল যোগের ভিত্তিভূমি।তাই প্রাচীন বৈদিক সাহিত্য অনুযায়ী এই যোগ আসলে এমন এক শারীরিক ও মানসিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে রূপ ও অরূপ বা সীমা ও অসীমের যোগ ঘটে।
সেই প্রাচীন ভাবনাকে বাদ দিয়েও বলা যায় মনকে শান্ত না করতে পারলে মন শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।তখনই শরীর মনের উপর প্রাধান্য বিস্তার করে।ফলে শরীরে নানা রোগ ব্যাধির সৃষ্টি হয়।মনের মধ্যেই জমা হয় পঞ্চ রিপু।তাই ‘যোগ’ থেকে বিবর্তিত ‘যোগব্যায়াম’ শব্দটি আজ খুব প্রাসঙ্গিক।সভ্যতার বিকাশের একটি অপরিহার্য পরিণাম ‘ভোগবাদ’।যত বেশি আমরা ভোগের দিকে ছুটেছি,ততই আমরা শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।
২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি রাষ্ট্রসঙ্ঘের একটি সভায় প্রস্তাব দেন,২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ঘোষণা করা হোক।রাষ্ট্র সঙ্ঘ সেই প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে মেনে নিয়ে ওই বছরই ১১ ডিসেম্বর ঘোষণা করেন,২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস।
মূল কথা হলো শ্বাস-প্রশ্বাস্ কে অনুশীলনের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট ধারায় এনে নানা রকম শারীরিক ব্যায়াম করাই হলো আধুনিক যোগ।
‘যোগ’ এর সঙ্গে ‘যোগাসন’ শব্দটি অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত।গুরুর নির্দেশিত পথে কয়েকটি যোগ বেয়াম এখন বিশ্বব্যাপী প্রচলিত।এতে শরীর ও মন শান্ত ও স্থির হয়ে।
তাই আসুন আমরা সবাই যোগাসন অনুশীলন করে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখি আর এই অনিত্য শরীরকে নিত্য পুরুষের সাথে যোগ করার চেষ্টা করি।তাহলেই সার্থক হবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস।